-
বর্ন এ কিং: রূপালি পর্দায় বাদশাহ ফয়সাল
বর্ন এ কিং (Born a King) (2019) – পুরাই আনএক্সপেক্টেড একটা মুভি। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আব্দুল আব্দুল আজিজের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের চিত্রায়ন।
সিনেমার কাহিনী ১৯১৯ সালের। সে সময় ব্রিটিশ সরকার আব্দুল আজিজ বিন সৌদকে ব্রিটেন সফরের নিমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু আব্দুল আজিজ তখন শেরিফ হুসেইনের সাথে যুদ্ধের আশঙ্কায় দেশ ত্যাগ করার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তার পরিবর্তে তিনি ইংল্যান্ডে পাঠান তার ছেলে, ভবিষ্যত বাদশাহ ফয়সালকে। সে সময় বাদশাহ ফয়সাল ছিলেন মাত্র ১৪ বছর বয়সী!
-
প্রিন্সেস সারভাত: যে বাঙালি নারী হতে যাচ্ছিলেন জর্ডানের রানি!
তার নাম প্রিন্সেস সারভাত (সারওয়াত) একরামউল্লাহ। জন্ম কলকাতায়। তার বাবা ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব, আর মা ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম দুই নারী এমপির একজন।
কিন্তু তার আরও দুটি পরিচয়ও আছে। তিনি হচ্ছেন পাকিস্তানের এককালের প্রধানমন্ত্রী, এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর ভাগ্নি। তার মা ছিলেন সোহরাওয়ার্দীর মামাতো বোন। একইসাথে তিনি বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের শ্যালিকা। এবং এই সারভাতেরই হওয়ার কথা ছিল জর্ডানের রানি!
-
হাশেমী রাজবংশ: উত্থান এবং বিস্তার
বর্তমান যে আরব বিশ্ব, তার প্রতিষ্ঠার মূলে আছে দুটি রাজবংশ – সৌদ রাজবংশ এবং হাশেমী রাজবংশ।
সৌদ রাজবংশ সম্পর্কে তো সবাই জানে, কিন্তু সৌদরা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হাশেমী রাজবংশ ছিল সৌদদের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান “সৌদি আরব” তো বটেই, সিরিয়া, থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত সমগ্র আরব ভূমিই তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল।
-
ইরাকের কুয়েত দখল এবং তার ফলাফল
আগস্টের ২ তারিখে কুয়েত দখল করে নেওয়ার পর ১৯৯০ সালের এই দিনে (২৮ আগস্ট) ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ঘোষণা দেন, কুয়েত হচ্ছে ইরাকের ১৯তম প্রদেশ।
কুয়েত দখলের পূর্বে সাদ্দামের সাথে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সাদ্দাম এমনকি কুয়েত দখলের পরিকল্পনা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও জানিয়েছিলেন। রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেছিলেন, এটা ইরাকের নিজস্ব ব্যাপার। আমেরিকার এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য নেই।
তার এই বক্তব্যকেই গ্রিন সিগন্যাল হিসেবে ধরে নিয়ে সাদ্দাম কুয়েত দখল করে বসেন। আর সাথে সাথে আমেরিকা তার অবস্থান পাল্টে ফেলে। সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সাথে মিলে তারা শুরু করে উপসাগরীয় যুদ্ধ।
এই যুদ্ধে ইরাকি সেনাবাহিনী প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান হামলা করে ইরাকের সিভিলিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ধ্বংস করে দেওয়া হয়। যুদ্ধে সরাসরি নিহত হয় অন্তত ২৫ থেকে ৫০ হাজার ইরাকি। কিন্তু যুদ্ধের পরবর্তী দিনগুলোতে অবরোধের কারণে, পুষ্টিহীনতায়, চিকিৎসার অভাবে মারা যায় লক্ষ লক্ষ ইরাকি।
সাদ্দামের কুয়েত দখলের কারণেই সৌদি আরব মার্কিন সেনাদেরকে নিজেদের দেশে আমন্ত্রণ জানায়। আর আরবের পবিত্র ভূমিতে মার্কিন সেনাদের এই উপস্থিতির প্রতিক্রিয়াই পরবর্তী দিনগুলোতে ওসামা বিন লাদেন এবং আল-কায়েদার উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কুয়েত দখলের মাধ্যমে সাদ্দাম এবং সেই দখলে সম্মতি দিয়ে, পরে পাল্টা অবস্থান নিয়ে আমেরিকা যে অন্যায় করেছিল, সেই অন্যায়ের খেসারত আজও দিয়ে যাচ্ছে ইরাক এবং আরব বিশ্বের সাধারণ জনগণ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে আমার সবগুলো লেখা পাবেন এই লিঙ্কে। আর রেগুলার আপডেট পেতে চাইলে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস ও রাজনীতি পেজটিতে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন।