-
স্পাই স্টোরিজে শুধু সিআইএ-মোসাদেরই কাহিনী কেন?
এই প্রশ্নটা আমাকে বেশ কয়েকজন করেছে – স্পাই স্টোরিজ পড়তে ভালো লেগেছে, কিন্তু শুধু সিআইএ-মোসাদের গল্পই কেন? মুসলমান রাষ্ট্রগুলোর গোয়েন্দাদের এরকম কোনো গল্প পাওয়া যায় না?
উত্তর হচ্ছে, আসলেই পাওয়া যায় না। এর কয়েকটা কারণ আছে।
প্রথমত, আমি যে সময়টার গল্প বলতে চেয়েছি, অর্থাৎ আধুনিক সময়ের, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরের বিশ্বের, এ সময় দুর্ভাগ্যবশত মুসলমানরা কেবল পরাজিতই হয়েছে। আর রাজনৈতিক বা সামরিক জয়-পরাজয়ের সাথে ইন্টালিজেন্সের সরাসরি সম্পর্ক থাকে।
-
ডিক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট কী?
নিউজে বা মুভিতে প্রায়ই ডিক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট কথাটা শোনা যায়। কিন্তু জিনিসটা কী?
রাষ্ট্রের স্বার্থে অনেক তথ্যকেই সিক্রেট বা টপ সিক্রেট ক্যাটাগরিতে ফেলে পাবলিকের কাছ থেকে গোপন রাখা হয়। ১০, ২৫ বা ৫০ বছর পর্যন্ত সেগুলো গোপন থাকতে পারে।
এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলে, কিংবা কখনও কখনও এর আগেই কেউ ফ্রিডম অফ ইনফরম্যাশন অ্যাক্ট জাতীয় কোনো ধারায় রিকোয়েস্ট করলে, কিংবা মামলা ঠুকে দিলে, অনেক সময় সরকার কিংবা গোয়েন্দাসংস্থাগুলো কিছু তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।
গোপন তথ্য প্রকাশ করার এই প্রক্রিয়াটাই হচ্ছে ডিক্লাসিফিকেশন। আর এই প্রক্রিয়ায় ডিক্লাসিফাই করা ডকুমেন্টকে বলা হয় ডিক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট। অর্থাৎ আগে কোনো ডকুমেন্ট “টপ সিক্রেট” হিসেবে ক্লাসিফাইড ছিল, এখন সেটাকে ডিক্লাসিফাই করা হয়েছে।
-
বিলিয়ন ডলার স্পাই: স্পাই স্টোরিজ বইয়ের এক্সার্প্ট
সিআইএর মস্কো স্টেশনের ক্ল্যান্ডেস্টাইন অফিসার বিল প্লাঙ্কার্ট দুশ্চিন্তায় আছেন। তার আশঙ্কা, গত দুই দশকের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নে সিআইএর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্পাই “সি.কে. স্ফিয়ার” হয়তো কেজিবির হাতে ধরা পড়ে গেছে। ধরা না পড়লেও অন্তত কেজিবির সন্দেহের তালিকায় নিশ্চয়ই তার নাম উঠে গেছে।
আর যদি সেরকম কিছুই হয়ে থাকে, তাহলে তাকে খুঁজে বের করতে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নিজেকে কেজিবির হাতে তুলে দেয়া। অথচ প্লাঙ্কার্টকে এখন ঠিক সেই কাজটিই করতে হবে।
-
ক্যাথারিন গান: যে স্পাই ইরাক যুদ্ধ থামিয়ে দিতে চেয়েছিল
হুইসেল ব্লোয়ারদের কথা উঠলেই আমাদের মনে পড়ে এডওয়ার্ড স্নোডেন কিংবা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের কথা, কিংবা বড়জোর পেন্টাগন পেপার্সের ড্যানিয়েল এলসবার্গের কথা। সন্দেহ নেই, তাদের প্রত্যেকের কাজই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু তারা মার্কিন সরকারের টপ সিক্রেট তথ্যগুলো প্রকাশ করেছেন বা করতে পেরেছেন সময়ের অনেক পরে।
সেই তুলনায় ক্যাথারিন গান এক ব্যতিক্রমী হুইসেল ব্লোয়ার। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি যখন জানতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য মিলে অন্যায়ভাবে ইরাক আক্রমণের জন্য জাতিসংঘের ভোট জালিয়তি করতে যাচ্ছে, তখন তিনি সময়ের অনেক আগেই সেটা ফাঁস করে দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সময় থাকতেই অন্যায় একটা যুদ্ধ থামিয়ে দিতে। বলাই বাহুল্য, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু সন্দেহ নেই তিনি বিশ্বের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন।
-
স্পাই স্টোরিজ: এসপিওনাজ জগতের অবিশ্বাস্য কিছু সত্য কাহিনী
মার্ক টোয়েন বলেছিলেন, Truth is stranger than fiction.
কাল্পনিক গোয়েন্দা কাহিনী তো আমরা প্রতিনিয়তই পড়ি। কিন্তু জটিল এই পৃথিবীতে ট্রু স্পাই স্টোরির সংখ্যাই এতো বেশি, সেগুলো পড়তে গেলেই এক জীবন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা।
ফিকশনের তুলনায় নন ফিকশন স্পাই স্টোরি পড়ার মধ্যে বাড়তি একটা লাভ আছে। এর মাধ্যমে গল্পের পাশাপাশি আপনি ইতিহাসের একটা অংশও জানতে পারবেন। জটিল আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কেও কিছুটা ধারণা পাবেন।
-
এলি কোহেন: দামেস্কে ইসরায়েলের ছদ্মবেশী গুপ্তচর
এলি কোহেন ছিলেন ইসরায়েলের বেস্ট স্পাইদের মধ্যে একজন।
এলি কোহেন ছিলেন মিসরীয় ইহুদী, কিন্তু তার বাবা ছিলেন সিরিয়ার আলেপ্পো থেকে আসা। ফলে কোহেনের মিসরীয় এবং সিরিয়ান – উভয় ডায়ালেক্টের আরবির উপরেই ভালো দক্ষতা ছিল। ১৯৫৭ সালে মোসাদে যোগ দেয়ার পর কোহেনকে ধনী সিরিয়ান ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে সিরিয়াতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যেন তিনি ক্ষমতাসীন সিরিয়ানদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন।
-
গল্পের শহর: যে বইয়ে স্থান পেয়েছে আমার একটি ননফিকশন থ্রিলার
বইয়ের শহর গ্রুপটি নতুন হলেও বেশ অ্যাকটিভ। দুইদিন পরপরই বিভিন্ন কুইজ, রিভিউ, প্রভৃতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে, পুরস্কার-টুরস্কারও দেয়।
বইমেলা উপলক্ষ্যে তারা একটি বই প্রকাশ করতে যাচ্ছে, নাম “গল্পের শহর”। বইটি প্রকাশিত হবে সূচিপত্র প্রকাশনী থেকে। কীভাবে কীভাবে যেন আমার একটি গল্পও এখানে স্থান পেয়ে গেছে 🙂
সূচিপত্র প্রকাশনী থেকে প্রকাশিতব্য বই গল্পের শহর, যে বইয়ে আছে আমার একটি স্পাই স্টোরি গল্পের শহর বইয়ের সূচিপত্র, যেখানে আছে আমার লেখা গোয়েন্দা গল্প উল্টোস্রোতের গুপ্তচর
বইটি মূলত হরর, থ্রিলার, ডিটেকটিভ এবং রোমান্টিক গল্পের সঙ্কলন। কয়েকটি গল্প নেওয়া হয়েছে সরাসরি গ্রুপের পক্ষ থেকে নির্বাচিত কিছু লেখকের কাছ থেকে, আর বাকি গল্পগুলো বাছাই করা হয়েছে গ্রুপের পাঠকদের পাঠানো গল্প থেকে।
আমি হচ্ছি সেই সৌভাগ্যবান লেখকদের একজন, যাকে সরাসরি গ্রুপের পক্ষ থেকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এবং আমি সম্ভবত এই লিস্টের সবচেয়ে অখ্যাত “লেখক”। সরাসরি নির্বাচিত বাকি সবাই দেখি বেশ বিখ্যাত, একাধিক বইয়ের লেখক, এবং পাঠকরাও তাদেরকে চেনে। আমিই বহিরাগত 🙂
আরো পড়ুন: স্পাই স্টোরিজ – সত্যিকার গুপ্তচরদেরদের কাহিনী নিয়ে আমার নন-ফিকশন থ্রিলার বই
আমার ফ্রেন্ডরা এবং নিয়মিত পাঠকরা যারা এতোক্ষণ ধরে ভ্রু কুঁচকে পড়তে পড়তে ভাবছিলেন, “এই লোক আবার গল্প লেখে কবে থেকে”, তাদের কাছে ক্লিয়ার করি – টেকনিক্যালি আমার লেখাটা গল্প না। এটা হচ্ছে ননফিকশন থ্রিলার। সত্যিকারের একটা স্পাই স্টোরি, কিছুটা থ্রিলারের আদলে লেখা। আশা করি ভালোই লাগবে পড়তে।
আমার গল্পটার নাম “উল্টোস্রোতের গুপ্তচর”। বইয়ের সূচিপত্রে এর অবস্থান চার নম্বরে। কোন দেশী স্পাই, কাহিনী কী, আপাতত গোপন থাকুক, বই বের হলে একেবারেই পড়ে নিয়েন। আপাতত প্রকাশের অপেক্ষায় আছি।
-
ইরান ক্যাবল: ইরাকে ইরানি গোয়েন্দাদের গোপন কার্যক্রমের তথ্য
এ বছরের মাঝ-অক্টোবরে বাগদাদজুড়ে যখন অস্থিরতার উত্তাল হাওয়া বইছিল, তখন সবার অলক্ষ্যে নীরবে শহরে প্রবেশ করেন এক পরিচিত ব্যক্তি। সে সময় কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইরাকের রাজধানী বাগদাদ ছিল অবরুদ্ধ। আন্দোলনকারীরা রাস্তা দখল করে মিছিল করছিল দুর্নীতির অবসান আর প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল মাহদির পদত্যাগের দাবিতে। বিশেষত তারা নিন্দা জানাচ্ছিল ইরাকি রাজনীতিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইরানের অস্বাভাবিক মাত্রার হস্তক্ষেপের। ইরানের বিরুদ্ধে তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছিল ইরানি পতাকা পোড়ানো এবং ইরানি কন্সুলেট আক্রমণ করার মধ্য দিয়ে।
পরিচিত ব্যক্তিটি সেখানে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। কিন্তু সেখানে তার উপস্থিতিই ছিল আন্দোলনকারীদের প্রধান ক্ষোভের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কারণ তিনি ছিলেন মেজর জেনারেল কাসেম সোলায়মানি, ইরানের প্রভাবশালী কুদস ফোর্সের প্রধান। এবং তিনি সেখানে গিয়েছিলেন ইরাকি পার্লামেন্টের এক মিত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আব্দুল মাহদিকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে কাজ করতে।