ইসলামিক মিলিট্যান্সি: ভারতীয় গোয়েন্দাদের পরবর্তী সম্ভাব্য অস্ত্র

ইসলামপন্থীদের যেটুকু ভালো ইমেজ তৈরি হয়েছে, সেটা শায়খ আহমাদুল্লাহ’র কারণে হোক, আর জামায়াতের আমিরের নিরলস ছোটাছুটি আর গণসংযোগের কারণে হোক, সেটা যদি ধ্বংস হয়, তাহলে বামপন্থীদের দ্বারা হবে না। অতি-বিপ্লবী ইসলামপন্থীদের দ্বারাই হবে।

বামপন্থীরা প্রমাণিত শত্রু। তাদের প্রপাগাণ্ডা এর আগে গ্রহণযোগ্যতা পেলেও গত কয়েক দশকে ধীরে ধীরে সেগুলো গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। কিন্তু ইসলামপন্থীদের মধ্যে যে বিপ্লবী অংশ, যারা আজকেই খিলাফত কায়েম করতে হবে, সশস্ত্র লড়াই করতে হবে টাইপ মনোভাব পোষণ করে, সেটা আল-কায়েদাই হোক বা অন্য কোনো ফ্যাকশন, তাদের রিস্কটা এখনও আমাদের কাছে অপ্রকাশিত।

মিসর-লিবিয়া-ইরাক – প্রতিটা দেশের দিকে তাকান। সেখানে জনগণ শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিল গণতন্ত্রের জন্য। এই গণতন্ত্রের দাবিদারদের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল পলিটিক্যাল ইসলামিস্টরা, তথা মুসলিম ব্রাদারহুড।

কিন্তু এরপর যে প্রতিটা দেশে ব্রাদারহুড পরাজিত হয়েছে, তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা বড় কারণ হচ্ছে সালাফিদের ভূমিকা – কোথাও মাদখালি সালাফি, কোথাও জিহাদি সালাফি। নিয়ত যেটাই থাকুক, ধরে নিচ্ছি নিয়ত ভালোই ছিল, কিন্তু দিনশেষে উভয় ধরনের সালাফিরাই পশ্চিমের পারপাস সার্ভ করেছে।

ইমেইলের মাধ্যমে নতুন পোস্টের আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে 40 জনের সাথে যোগ দিন।

বাংলাদেশে এতটা বছর মুসলমানরা নির্ভয়ে ইসলামটা পর্যন্ত পালন করতে পারেনি। নির্ভয়ে দাড়ি রাখতে পারেনি, হিজাব পরতে পারেনি, ইসলামিক বই ঘরে রাখতে পারেনি। দেশ পরিণত হয়েছিল মাফিয়া স্টেটে। দেশকে তুলে দেওয়া হয়েছিল ভারতের হাতে।

দীর্ঘদিনের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো একটা সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে এমন মানুষদের সরকারে এবং বিরোধীদলে যাওয়ার, যারা ফেরেশতা না, যাদের প্রচুর সীমাবদ্ধতা আছে, যাদের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ আছে; কিন্তু অ্যাটলিস্ট যারা বিদেশের দালাল না, যারা দেশের ৯০ ভাগ মানুষের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি বৈরিভাবাপন্ন না।

দীর্ঘদিনের মধ্যে এটাই হয়তো হতে যাচ্ছে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সুযোগ। আইনের শাসন যদি প্রতিষ্ঠিত করা যায়, মানুষ নির্ভয়ে তাদের ধর্মকর্ম পালন করতে পারে, মতাদর্শ প্রচার করতে পারে, তাহলে ধীরে ধীরে সত্যই বিজয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকবে।

কিন্তু এই পুরো জার্নিটই ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে ভুল পথে এগোলে। ভুল পথ অনেক ধরনের হতে পারে। তারমধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হবে ইসলামিক মিলিট্যান্সির পুনরুত্থান ঘটানো। আর কয়েকমাস পরেই ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে দেওয়া। অথবা ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য রিক্রুট শুরু করে দেওয়া।

এসপিওনাজ বিষয়ক বই লেখার জন্য যেসব বইপত্র ঘাঁটাঘাটি করতে হয়েছে, তার ভিত্তিতেই বলি, আমি যদি বিদেশী ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির দায়িত্বে থাকতাম, তাহলে এখন ঠিক এই কাজটাই করতাম। একিউপন্থী তুমুল জনপ্রিয় ফেসবুক সেলিব্রেটিদের পোস্টগুলোর নিচের কমেন্ট থেকে তাদের আল্ট্রা জিহাদি ফ্যানবয়দেরকে খুঁজে বের করে ফেইক শাইখ দ্বারা রিক্রুট করতাম।

ইনফ্যাক্ট নতুন করে রিক্রুট করার দরকারই হওয়ার কথা না; এরকম রিক্রুট অলরেডি থাকার কথা। ডিজিএফআইর লিস্টে যদি এরকম রিক্রুট বা সম্ভাব্য রিক্রুটের তালিকা না থাকে, তাহলে আমি খুবই অবাক হবো।

গল্পগুলো সিরিয়ার মকআপ

আমার নতুন বই!!!

স্পাই স্টোরিজ ২: স্নায়ুযুদ্ধের সফলতম ডাবল এজেন্টের কাহিনি

অবিশ্বাস্য সত্য ঘটনা অবলম্বনে ননফিকশন স্পাই থ্রিলার। উচ্চপদস্থ এক ডাবল এজেন্টের কাছে ১৫ বছর ধরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নাস্তানাবুদ হওয়ার কাহিনি।

৪০০ .০০

পাবেন রকমারি ডট কমে (22% ছাড়ে), প্রকাশনীর ফেসবুক পেজ (25% ছাড়ে) এবং আপনার পছন্দের যেকোনো অনলাইন বুকশপে।

বিস্তারিত
Short PDF

এই ধরনের রিক্রুট, যারা জানেও না তারা আসলে ইন্টেলিজেন্সের হয়ে কাজ করছে, তাদেরকে দিয়ে অনেক কিছুই ঘটানো সম্ভব। নাস্তিক কেউ যদি ইসলামবিদ্বেষী, ইসলাম অবমাননাকারী কোনো বক্তব্য দেয়, তার বিরুদ্ধে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ানো সম্ভব। অথবা তার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে রাজধানী অচল করে দেওয়া মিছিলের ডাকা দেওয়া সম্ভব।

এই ধরনের ঘটনা একসাথে অনেকগুলো পারপাস সার্ভ করবে। ইউনুসের সরকারকে দ্বিমুখী বিপদে ফেলবে। তারা না পারবে এদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো অপারেশনে যেতে, না পারবে এদের দাবি-দাওয়া পূরণ করতে। ফলে একদিকে তারা আন্তর্জাতিক লেজিটিমেসি হারাবে, অন্যদিকে দেশের ভেতরেও বিভাজন সৃষ্টি হবে।

একইসাথে যে সহানুভূতি ইসলামপন্থীদের প্রতি তৈরি হচ্ছিল, সেটা অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে। নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য আসন পাওয়ার যে সম্ভাবনাটা তাদের তৈরি হয়েছিল, তার অনেকটাই ভেস্তে যাবে। আর এই সুযোগটা পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করবে তৃতীয় পক্ষ।

আমাদের দেশের মেইনস্ট্রিম আলেমদের – ধরেন, এর আগে ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির, এবং তার ভাবধারার আহমাদুল্লাহ, সাইফুল্লাহ, বা অন্যদিকে আজহারি সাহেবদের বক্তব্য সব সময়ই কিছুটা মডারেট। সামনের দিনগুলোতে সম্ভাব্য এক্সট্রিমিজম রোধে তাদেরকে অনেক অনেক বেশি অ্যাক্টিভ হতে হবে। তার চেয়ে বেশি অ্যাক্টিভ হতে হবে জামায়াতে ইসলামিকে। তা না হলে এভ্রিথিং উইল গো ব্যাক টু স্কয়ার ওয়ান – জাস্ট লাইক লিবিয়া, সিরিয়া, ইজিপ্ট।

আমার বিশ্লেষণমূলক লেখা যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে আমার এই লেখাটাও পড়ে দেখতে পারেন:

Mozammel Hossain Toha
Mozammel Hossain Toha

জন্মের পর থেকেই লিবিয়ায় আছি। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি একেবারে সামনে থেকে। আর সে কারণেই পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও আগ্রহ গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস এবং রাজনীতিকে ঘিরে।

নিয়মিত লেখালেখি করছি সোশ্যাল মিডিয়ায়। আলোচনা করছি ইউটিউবে। এখন পর্যন্ত তিনটা বই প্রকাশিত হয়েছে: স্পাই স্টোরিজ, স্পাই স্টোরিজ ২ এবং গল্পগুলো সিরিয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *