বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগের অপকর্মের ওয়েবসাইট

এই মুহূর্তে একটা ওয়েবসাইট বানানো খুবই জরুরী, যেখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাশাপাশি দুটো কলাম থাকবে। একটাতে থাকবে আওয়ামী শাসনামলের অপকর্মের লিস্ট, আরেকটাতে বিএনপি শাসনামলের অপকর্মের লিস্ট।

এটা কেন করা জরুরী, নিচে ব্যাখ্যা করছি। তার আগে ওয়েবসাইটটা কেমন হতে হবে, সেটা ব্যাখ্যা করি।

যেমন ধরেন, দুর্নীতির ক্যাটাগরি। ওয়েবসাইটের একপাশের কলামে থাকবে বিএনপি আমলে বিভিন্ন প্রজেক্টে কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলোর তালিকা। সব এক, দুই করে সাল-তারিখ অনুযায়ী সাজানো থাকবে। লিঙ্কে রেফারেন্স দেওয়া থাকবে। সবার উপরে থাকবে টোটাল দুর্নীতির টাকার পরিমাণ। আর পাশের কলামেই থাকবে আওয়ামী লীগের দুর্নীতির বিবরণ।

একইভাবে থাকবে বিদেশে টাকা পাচার, বিচারবহির্ভূত হত্যা-সহ বিভিন্ন অপরাধের ক্যাটাগরি। প্রতিটা পেজের নিচে থাকবে সেই ক্যাটাগরিতে ডেটা এন্ট্রির অপশন। সেখানে ভিজিটররা ফরম্যাট মেনে ডেটা এন্ট্রি করতে পারবে। মডারেটররা পরে সেগুলো অ্যাপ্রুভ করে দিবে।

কাজটা সহজ হবে না। কিন্তু এটা করা উচিত। অনেস্টলি করা উচিত। দেশের স্বার্থে। কাজটা চাইলে “নিরপেক্ষ” কেউ করতে পারে, চাইলে বিএনপির কেউও করতে পারে। তাদের হারানোর কিছু নাই। তারা যদি নিজেদের সব অপরাধ তন্ন তন্ন করে খুঁজে লিস্টে যোগ করে, আর বিপরীতে আওয়ামী লীগের অপরাধগুলো দায়সারাভাবে যোগ করে, তারপরেও আওয়ামী অপরাধ তাদের অপরাধকে বহুগুণে ছাড়িয়ে যাবে।

কিন্তু এরফলে যেটা হবে, ভণ্ড-বদমাশগুলি, যারা এত বছর ঘাপটি মেরে চুপ করে ছিল, তারা এসে “আরে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুইটাই সমান খারাপ” বয়ান প্রচার করতে পারবে না। করতে গেলেই ওয়েবসাইটটা ধরিয়ে দেওয়া যাবে।

কোনো তর্ক-বিতর্কের দরকার হবে না, লিঙ্ক খোঁজাখুঁজির দরকার হবে না, “আমরা অমুক আমল দেখছি, তোমরা দেখ নাই, তাই জান না” টাইপের কথাবার্তার দরকার হবে না; ওয়েবসাইটেই সব তথ্য দেওয়া থাকবে – একেবারে কোয়ান্টিটেটিভলি, কে এক্সাক্টলি কত হত্যা করেছে, কে এক্সাক্টলি কত হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে।

আমার সবগুলো বই


মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার স্পাই স্টোরিজ বইয়ের প্রচ্ছদ
মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার স্পাই স্টোরিজ ২ বইয়ের প্রচ্ছদ
মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার গল্পগুলো সিরিয়ার বইয়ের প্রচ্ছদ

ওয়েবসাইটটা হতে হবে প্রফেশনাল। ওয়েব ডেভেলপমেন্টের দিক থেকেও, ডেটা কালেকশন এবং প্রেজেন্টেশনের দিক থেকেও। সবচেয়ে ভালো হয়, অ্যাকাডেমিয়ার সাথে জড়িত মানুষজনকে দিয়ে ডেটা কালেকশনের কাজটা করালে।

বিএনপি হয়তো এখন এটার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবে না। “গ্রামেগঞ্জে সব ভোটই তো আমরা পাবো” – এই খুশিতেই তারা আটখানা হয়ে আছে। কিন্তু তারা যেটা কখনোই বোঝে না, এবং সেজন্য ভোট বেশি থাকা সত্ত্বেও বারবার মারা খায়, সেটা হচ্ছে, ভোট দিয়ে সব সময় ক্ষমতায় থাকা যায় না। এর পাশাপাশি সফট পাওয়ার থাকতে হয়। মিডিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হয়। সুশীল সমাজকে হাত করতে হয়। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ঢাকার মধ্যবিত্ত শিক্ষিত তরুণ সমাজকে নিজের পক্ষে রাখতে হয়।

আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপি যতই ফেরেশতা হোক, ঢাকার মধ্যবিত্ত শিক্ষিত তরুণ শ্রেণিকে যদি বোঝানো যায় যে “বিএনপি-আওয়ামী লীগ” দুইটাই সমান খারাপ, তাহলে গ্রামে যত ভোটই থাকুক, বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও শান্তিতে থাকতে পারবে না। এবং সেই ক্ষমতাও হয়তো স্থায়ী হবে না।

তাদের নিজেদের স্বার্থে, এবং একইসাথে দেশের স্বার্থেই তাই এই ধরনের কাজগুলো জরুরী।

ইমেইলের মাধ্যমে নতুন পোস্টের আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে 40 জনের সাথে যোগ দিন।
Mozammel Hossain Toha
Mozammel Hossain Toha

জন্মের পর থেকেই লিবিয়ায় আছি। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি একেবারে সামনে থেকে। আর সে কারণেই পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও আগ্রহ গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস এবং রাজনীতিকে ঘিরে।

নিয়মিত লেখালেখি করছি সোশ্যাল মিডিয়ায়। আলোচনা করছি ইউটিউবে। এখন পর্যন্ত তিনটা বই প্রকাশিত হয়েছে: স্পাই স্টোরিজ, স্পাই স্টোরিজ ২ এবং গল্পগুলো সিরিয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *