কথাটা অনেকেই বলছেন, এবং আমিও পুরোপুরি বিশ্বাস করি, এই যে একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটে গেল – মাত্র ২০ দিনে এবং শুনতে খারাপ লাগলেও “মাত্র” হাজারের কাছাকাছি প্রাণের বিনিময়ে, ইটস নাথিং শর্ট অফ এ মিরাকল।
দেখেন, গত ১৫-১৬ বছর ধরে মানুষের জমে থাকা ক্ষোভ, দেশে-বিদেশে কাজ করা বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টের অবদান, সমন্বয়কদের অতুলনীয় সাহস, ছাত্রদের জীবন বিপন্ন করে রাস্তায় নেমে আসা, সর্বস্তরের জনগণের তাদের পক্ষে সমর্থন দেওয়া – কোনো কিছুকেই ছোট করে দেখছি না।
কিন্তু তারপরেও ৪ তারিখ রাত পর্যন্ত, ইভেন ৫ তারিখ সকাল পর্যন্তও কেউ নিশ্চিত ছিল না কী ঘটতে যাচ্ছে। হাসিনা নিজে পর্যন্ত জানত না তাকে পদত্যাগ করতে হবে। এমনকি ডিবি হারুন, যে আক্ষরিক অর্থেই দেশের “ডিটেক্টিভ” ব্রাঞ্চের প্রধান, তার পর্যন্ত দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, সেদিনই সবকিছু কন্ট্রোলে চলে আসবে। টিবিএস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সেনাপ্রধান ভাষণ দিবেন শোনার পরেও সে আশা করছিল, সেনাবাহিনী সরকারের পক্ষে অবস্থান নিবে।
অথচ মুহূর্তের মধ্যে কী হয়ে গেল! সুবহানাল্লাহ!
হ্যাঁ, জুলাইয়ের শেষের দিক থেকেই, যখন দেশে-বিদেশে সর্বস্তরের মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছিল, তখনই বোঝা যাচ্ছিল, এই সরকারের লেজিটিমেসি শেষ। এরপর পতন শুধু সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু লেজিটিমেসি ছাড়াও অনেক স্বৈরাচার অনেক বছর টিকে থাকে। রাবা ম্যাসাকারে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেও ১০ বছর ধরে সিসি বহাল তবিয়তে টিকে আছে। বিদেশী পরাশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কয়েক লাখ লোককে হত্যা করেও বাশার আল-আসাদ ১৩ বছর ধরে টিকে আছে। বাংলাদেশও ইজিলি সেই পথে হাঁটতে পারত। হাসিনার সেই পথেই হাঁটার ইচ্ছে ছিল।
সেটা যে হয়নি, সেটাই মিরাকল। সেটাই ডিভাইন ইন্টারভেনশন।
আলহামদুলিল্লাহ। সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।