সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন রোর বাংলার এই লিঙ্ক থেকে।
লেখক এই বইটার সফট কপি পাঠিয়েছিলেন মেলার শুরুর দিকেই। আগ্রহোদ্দীপক টপিক, কয়েকদিনের মধ্যেই পড়ে রিভিউ দিয়েছিলাম, যদিও ফেসবুকে ব্লক থাকায় শেয়ার করতে পারিনি। অবশ্য রোর বাংলায় এখন পর্যন্ত রিভিউটা ৭৩০০ মানুষ পড়েছে। বইয়ের রিভিউ হিসেবে সংখ্যাটা ভালোই।
বেশ ইন্টারেস্টিং বই। রিভিউতে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখানে একটা অংশ তুলে দিচ্ছি:
একেবারে সাধারণ পাঠকদেরকে বোঝানোর জন্য লেখক প্রথমেই রূপসাগর নামে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের কথা কল্পনা করেছেন, যে দ্বীপে মাত্র ১০টি পরিবারের বসবাস। সেই গ্রামে শুরুতে কোনো টাকা-পয়সার প্রচলন ছিল না। সবাই সেখানে একটি পণ্যের বিনিময়ে অন্য একটি পণ্য গ্রহণ করত।
এই মানদণ্ডকে এরপর লেখক ধীরে ধীরে জটিল থেকে জটিলতর করে তুলতে থাকেন। রূপসাগরের পর তিনি রূপনগর, জীবনসাগর, সুবর্ণ-নগর নামে ভিন্ন ভিন্ন দ্বীপের উদাহরণ টেনে দখাতে থাকেন, কীভাবে বিভিন্ন বাস্তবমুখী প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে সেখানে ধীরে ধীরে স্বর্ণমুদ্রা, কাগজের টাকা, ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বিভিন্ন প্রকার শর্তের সুদ ব্যবস্থা আত্মপ্রকাশ করছে এবং সেসব দ্বীপের অর্থনীতি ক্রমেই আমাদের পরিচিত পৃথিবীর অর্থনীতির মতো হয়ে উঠছে।
বইটিতে লেখক মূলত দুটি বিষয় পাঠকদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। প্রথমটি হচ্ছে ব্যাংক এবং মুদ্রাব্যবস্থার বিবর্তন, এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে সুদভিত্তিক অর্থব্যবস্থার কুফল। এবং দ্বিতীয় এ বিষয়টির প্রমাণ লেখক দিয়েছেন বইটির প্রতিটি পরতে পরতে।
একেবারে শুরুর কড়িভিত্তিক অর্থব্যবস্থা থেকে শুরু করে আধুনিক ফিয়াট মানি পর্যন্ত অর্থব্যবস্থার প্রতিটি ধাপ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লেখক তুলনা করে দেখিয়েছেন, প্রথমে সুদ ছাড়া যখন শুধু ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড প্রচলিত থাকে, তখন কীভাবে জনগণের হাতেই অর্থ থাকে, এবং এরপর সুদভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা চালু হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যেই কীভাবে দেশের প্রায় সকল অর্থ ব্যাংকগুলোর হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষ কেবল ব্যবহার করতে থাকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া অর্থ।
আমাদের আশেপাশে আমরা সাধারণত ধর্মীয় বক্তাদেরকেই সুদভিত্তিক অর্থব্যবস্থার কুফল সম্পর্কে আলোচনা করতে দেখি। এবং সেই আলোচনাও হয় কেবলই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। কিন্তু “ব্যাংক ব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য” বইটি কোনো ধর্মীয় বই না, এবং এর লেখক মোহাইমিন পাটোয়ারীও কোনো ধর্মীয় বক্তা নন। তিনি একজন তরুণ অর্থনীতি বিশ্লেষক, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে এরপর নরওয়ে এবং জার্মানি থেকে অর্থনীতিতে দুটি মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। সুদভিত্তিক অর্থব্যবস্থার যে কুফল, সেটা তার বইয়ে তিনি তুলে ধরেছেন অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকেই।