চমৎকার একটা ফ্রেঞ্চ মুভি লা মিজারেবলস (Les Misérables)। লুজলি বেজড অন এ ট্রু স্টোরি। এবং স্টোরিটা ঘটেছিল পরিচালকের নিজের জীবনেই!
মালিয়ান বংশোদ্ভূত পরিচালক লাজ লি ছিলেন ফ্রান্সের দরিদ্র এলাকার এক রাবিশ কালেক্টরের ছেলে। ছোটকাল থেকেই কৃষ্ণাঙ্গ গরীবদের উপর ফ্রান্সের শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতন দেখে বড় হয়েছেন তিনি। একটু বড় হওয়ার পর যখন হাতে একটি হ্যান্ডহেল্ড ভিডিও ক্যামেরা পান, তখন থেকে সেটা দিয়ে পুলিশি নির্যাতনের ভিডিও করতে শুরু করেন তিনি।
তার করা এরকম একটা ভিডিওই ২০০৫ সালে ভাইরাল হয়ে যায়। দাবানলের মতো বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের রায়ট ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র ফ্রান্সে। সেই ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই ১৪ বছর পর তিনি নির্মাণ করেছেন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র লা মিজারেবলস (২০১৯)।
সিনেমার কাহিনী ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পরের সময়ের। ফ্রান্সের দরিদ্র, আফ্রিকান, মুসলিম নেইবারহুডের এক ছেলেকে চুরির সন্দেহে ধরে এনে পুলিশ ফ্ল্যাশগান থেকে গুলি চালায়। গুলি এক কিশোরের মুখে আঘাত করলে সে অচেতন হয়ে যায়।
পুরো ঘটনাটা উপর থেকে ড্রোন দিয়ে রেকর্ড করে ফেলে আরেক আফ্রিকান কিশোর। শুরু হয় পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশের শক্তির সামনে অসহায় আফ্রিকান কিশোররা এক পর্যায়ে রুখে দাঁড়ায়। মাস্ক আর হুড পরে একজোট হয় প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।
লা মিজারেবলস সিনেমাটার প্রথম অর্ধেক একটু স্লো মনে হতে পারে, কিন্তু পরের অর্ধেক অসাধারণ। এন্ডিংটা অবশ্য ওপেন রেখে দেওয়া হয়েছে।
সিনেমাটা গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। অস্কারে বেস্ট ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজে নমিনেশন পেয়েছিল। এবং সিনেমাটা মুক্তি পাওয়ার পর নতুন করে শুরু হয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোও বাধ্য হয়েছিলেন এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আরো পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করতে।
সিনেমার নামের সাথে ভিক্টর হিউগোর উপন্যাসের নামের মিল থাকলেও কাহিনীর কোনো মিল নেই। ওটা জাস্ট থিমের সাথে সম্পর্ক থাকায় একটা রেফারেন্স হিসেবে এসেছে। সিনেমাটার আইএমডিবি রেটিং 7.6। রেকমেন্ডেড।
আমার লেখা সবগুলো মুভি রিভিউ পাবেন এই লিঙ্কে।