রাক্বা, সিরিয়া, ২০১১।
লোকাল বাসে করে যাওয়ার সময় এক তরুণী আবির তার প্রেমিক স্যামকে ভালোবাসার কথা বলে ফেলে। আবেগে আপ্লুত হয়ে স্যাম সেখানেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসে। বাসভর্তি মানুষের সামনে বিয়ের ঘোষণা দিতে গিয়ে উচ্চারণ করে বসে নিষিদ্ধ কিছু শব্দ – বিপ্লব, স্বাধীনতা।
এই ঘটনাই পাল্টে দেয় স্যাম এবং আবিরের জীবনকে। রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দাবাহিনী স্যামকে তুলে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। পরিচিত এক পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে পালাতে পারলেও সিরিয়ায় থাকা তার জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে। বর্ডার দিয়ে পালিয়ে সে চলে যায় লেবাননে। আর ওদিকে পরিবারের চাপে অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে বেলজিয়ামে চলে যায় আবির।
ঠিক এরকম সময় লেবাননে এক বেলজিয়ান আর্টিস্টের সাথে পরিচয় হয় স্যামের। স্যামের প্রয়োজন বেলজিয়ামে যাওয়ার। আর সে জন্য প্রয়োজন শেঙ্গেন (Schengen) ভিসার। অন্যদিকে আর্টিস্টের দরকার ইউনিক আইডিয়ার আর্ট, যা দেখার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়বে।
ফলে সেই আর্টিস্ট অভিনব এক প্রস্তাব দেয় স্যামকে। স্যামের পিঠ সে কিনে নেয়। সেখানে সে যত্ন করে এঁকে দেয় শেঙ্গেন (Schengen) ভিসার একটি ট্যাট্টু। এরফলে স্যাম হয়ে ওঠে লিভিং আর্ট। আর সেই কমোডিটি হিসেবেই সে পেয়ে যায় আর্টিস্টের সাথে ইউরোপে যাওয়ার সুযোগ।
কাহিনীর জটিলতা কেবল শুরু। একজন সিরিয়ান শরণার্থীকে অর্ধ উলঙ্গ করে তার পিঠে ট্যাট্টু এঁকে সেটাকে আর্ট হিসেবে ব্যবহার করায় সমালোচনার ঝড় উঠতে থাকে। সিরিয়ান মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়ে উঠতে থাকে। ওদিকে আবিরের সাথে গোপনে স্যামের যোগাযোগের বিষয়টি জেনে ফেলে আবিরের স্বামী। আবিরকে নিয়েই সে সরাসরি উপস্থিত হয় আর্ট প্রদর্শনীতে। কাহিনী এগিয়ে যেতে টুইস্টের দিকে …
অদ্ভুত সুন্দর একটা মুভি – The Man Who Sold His Skin (2020)। নির্মাণ করেছেন তিউনিসিয়ান নারী পরিচালক কাউসার বেন হানিয়া। মুভিটা এ বছর অস্কারে বেস্ট ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ফিল্ম ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পেয়েছে। তিউনিসিয়ার জন্য এটা প্রথম অস্কার নমিনেশন। যদিও মুভির ল্যাঙ্গুয়েজ প্রধানত ইংরেজি, কিন্তু জিতলে এটাই হবে প্রথম অস্কার জয়ী আরব দেশীয় মুভি।
পার্সোনাল রেটিং ৮/১০। হাইলি রেকমেন্ডেড।
মুভি-সিরিয়াল সম্পর্কিত আমার সবগুলো লেখা একত্রে পাবেন এই লিঙ্কে।