গত আগস্টের ৩ তারিখে গাদ্দাফির পুত্র সাইফ আল-ইসলামের পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ঐ প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি জায়গায় আমার মন্তব্য নেওয়া হয়। নিচে প্রতিবেদনটির নির্বাচিত অংশ তুলে দেওয়া হলো:
আরব বসন্ত নিয়ে কি লিবিয়ানদের মোহভঙ্গ হয়েছে?
সাইফ আল ইসলাম গাদ্দাফির এই সাক্ষাৎকার এবং ক্ষমতায় ফেরার বিষয়ে তার আকাঙ্ক্ষা কতটা আগ্রহ তৈরি করেছে লিবিয়ায়?
লিবিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় শহর সির্তের বাসিন্দা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রকৌশলী এবং ব্লগার মোজাম্মেল হোসেন তোহা বলেন, তোলপাড় না হলেও লিবিয়া এবং আরব বিশ্বের অনেক মিডিয়ায় এই সাক্ষাৎকারের খবর বেরিয়েছে এবং তা নিয়ে বেশ কথাবার্তা হচ্ছে।
বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় গত দু’দিন ধরে অনেক মন্তব্য তর্ক-বিতর্ক চলছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানান তিনি।
“মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখছি। ২০১৪ সালের পর সাইফ গাদ্দাফির কোন ছবি বা ভিডিও বের হয়নি। ফলে অনেকে বিভ্রান্ত। সাক্ষাৎকারের সাথে ছাপা লম্বা দাড়িওয়ালা ছবি দেখে অনেকে বলছেন এটা আসল সাইফ ইসলাম না, তার ছোট ভাই। নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপা হওয়ার কারণে অনেকে বলছেন এটা আমেরিকার আরেক কারসাজি। অনেকে আবার উৎফুল্ল।“
কিন্তু কোন ভরসায় সাইফ ইসলাম লিবিয়ার ক্ষমতায় নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন?
সাংবাদিক রবার্ট ওয়ার্থ বলছেন, সাইফ গাদ্দাফি এখন বিশ্বাস করেন যে ২০১১ সালের বিপ্লব নিয়ে লিবিয়ার মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে, তারা এখন হতাশ, অনুশোচনা করছে এবং তার বাবার শাসনামল নিয়ে নস্টালজিয়ায় ভুগতে শুরু করেছে।
তার কিছু নমুনা তিনি নিজেও দেখেছেন বলে ওই সাংবাদিক লিখেছেন।
দু’টো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার তিনি উল্লেখ করেন – ত্রিপোলির কাছে একটি মহাসড়কের পাশে এক দোকানে ঢুকে তিনি দেখেন মানুষজন টিভিতে গাদ্দাফির ৮০-র দশকের একটি ভাষণ শুনছে। কায়রো ভিত্তিক একটি টিভি সেটি প্রচার করছিল।
আরেক ঘটনায় মে মাসে ত্রিপোলিতে এক রেস্তোরায় চারজন তরুণকে মি. ওয়ার্থ প্রশ্ন করেন ডিসেম্বরের নির্বাচনে তারা কাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান। তিনজনেরই উত্তর ছিল সাইফ আর ইসলাম।
মোজাম্মেল তোহা বলেন, ১০ বছর আগের বিপ্লব নিয়ে অনেক মানুষের যে মোহভঙ্গ হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। “আমরাই এক সহকর্মী, যিনি ২০১১ সালে অস্ত্র হাতে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন, তিনি দু’দিন আগে আমাকে বললেন তিনি সাইফ আল ইসলামকে সমর্থন করবেন।“
কিন্তু প্রশ্ন হলো, ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়ে কোনওরকম প্রাণে বেঁচে ১০ বছর উধাও থাকার পর ক্ষমতার রাজনীতিতে ফেরা কতটা সহজ হবে সাইফ গাদ্দাফির জন্য?
মোজাম্মেল তোহা মনে করেন, একবারেই সহজ হবে না।
“এই দশ বছরে যে সব মানুষ শক্তিধর হয়েছে, ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করছে তারা আরেকজনকে, বিশেষ করে গাদ্দাফি পরিবারের কাউকে, সেই ক্ষমতায় ভাগ বসাতে দিতে চাইবে না।“
পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে পারেন এখান থেকে। আর সাইফের ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে আমার পুরনো একটি লেখা পড়তে পারেন এখান থেকে – গাদ্দাফীর ছেলে সাইফ আল-ইসলামই কি হবেন লিবিয়ার ভবিষ্যত নেতা?