কাউকে ইন্টারনেট চালানো, গুগলে সার্চ করা শেখালে কি পাপ হবে? গুনাহ হবে?
মানে বাংলাদেশের কনটেক্সটে চিন্তা করেন। আপনি নিজে হয়তো ভালো মানুষ, কিন্তু গুগলে গিয়ে ম্যাক্সিমাম বাংলাদেশী কী খোঁজে? দুবাইর “বুর্জ খলিফা” টাওয়ারের ছবি। স্ট্যাটিস্টিক্স সেটাই বলে।
একই কথা ইউটিউবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আপনি হয়তো ভালো কাজে ইউটিউব ব্যবহার করেন। কিন্তু সেখানেও সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা ভিডিওগুলো হচ্ছে “পাশের বাসার ভাবি” কী মজার খাবার রান্না করলেন, সেগুলো।
ফেসবুকের ব্যাপারটাও একই। আমাদের এই গণ্ডিতে হয়তো আমরা প্রচুর মোটিভেশনাল ভিডিও আর নীতিকথা শেয়ার দিচ্ছি। কিন্তু ম্যাক্সিমাম বাংলাদেশী ফেসবুকে কী করে? অপ্রয়োজনীয় বা কিছুক্ষেত্রে অশ্লীল ভিডিও, বা মডেলদের ছবি শেয়ার করে, অথবা ইনবক্সে একাধিক মানুষের সাথে প্রেম করে, আজেবাজে কমেন্ট করে।
সুতরাং আপনি যদি কাউকে গুগল, ইউটিউব বা ফেসবুক চালানো শেখান, সম্ভাবনা আছে সেও দুই দিন পরে এগুলোই সার্চ করবে বা দেখবে। তারমানে কি আপনি তাকে পাপের পথে আহ্বান করলেন? তার পাপের ভাগীদার হলেন?
আপনি হয়তো বলবেন গুগল, ইউটিউব বা ফেসবুকে যেহেতু অনেক ভালো কন্টেন্টও আছে, তাই এগুলো ব্যবহার করা শেখালে অন্যায় হবে না। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রশ্ন করতে হবে টিকটকের ক্ষেত্রে বিচারটা কেন ভিন্ন হবে?
সন্দেহ নাই, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে টিকটকে অর্থহীন, মাইন্ডলেস এবং অশ্লীল ভিডিও ছাড়া ভালো তেমন কিছুই তৈরি হয় না। সো ইয়েস, আমি নিজেও টিকটককে বা টিকটক কন্টেন্ট নির্মাতাদেরকে জাজ করি। কিন্তু তাই বলে রাষ্ট্রীয় বা ধর্মীয়ভাবে শুধু কন্টেন্টের বিরুদ্ধে না, টিকটক অ্যাপটার বিরুদ্ধেই কথা বলা বা ব্যবস্থা নেওয়া কী যৌক্তিক?
ভেবে দেখেন, এখনও কিন্তু গুগল-ইউটিউব ম্যাক্সিমাম বাংলাদেশী খারাপ কাজেই ব্যবহার করে। এবং সেটা এখন এত ভালো ভালো কন্টেন্ট থাকার পরেও। আজ থেকে ১০ বছর আগে, যখন এত ভালো কন্টেন্ট ছিল না, তখন ব্যাপারটা কীরকম ছিল?
এখন টিকটককে যেরকম খারাপ বলা হচ্ছে, সে সময় যদি গুগল, ইউটিউব বা ফেসবুককেও সেরকম খারাপ বা হারাম বলা হতো, বা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হতো, তাহলে ১০ বছর পর আজকের পরিস্থিতিটা কী হতো?