
ইমরান খানের পতনের দায় তার নিজেরও
সবাই ইমরান বন্দনায় ভাসছে – এই সুযোগে ব্রাত্য রাইসুইয় স্টাইলে একটু বিপরীত কথা বলি।
আপনি প্রচণ্ড অনেস্ট এবং ক্যারিশম্যাটিক লিডার হতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি আপনার কাজকর্ম এবং কথাবার্তা দিয়ে আশেপাশের সবাইকে ক্ষেপিয়ে তোলেন, আপনি যদি না বোঝেন কোন সময় কোন পদক্ষেপ নিলে সেটা আপনার এবং দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে, তাহলে আপনাকে যেরকম ব্রিলিয়ান্ট লিডার মনে করা হয়, আপনি সম্ভবত সেরকম ব্রিলিয়ান্ট না।
আপনি বেসিক্যালি গরীবের জেলেনস্কির অনেস্ট এবং ক্যারিশম্যাটিক ভার্সন। জেলেনস্কি যেরকম ন্যাটো ন্যাটো করে রাশিয়াকে ক্ষেপিয়ে তুলে নিজের দেশের উপর যুদ্ধ টেনে এনেছে, আপনিও সেরকম এমন ক্রিটিকাল মুহূর্তে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন, যেই ঝুঁকে পড়া আপনার দুই পয়সার উপকার করেনি, উল্টো আমেরিকা এবং সেই সুবাদে সেনাবাহিনীকে ক্ষেপিয়ে তুলে আপনাকে বিদায় নিতে বাধ্য করেছে।
শুধু অনেস্টির তো কোনো মূল্য নাই। অনেস্টের পাশাপাশি চতুর্মুখী খেলতে জানতে হবে। এরদোয়ানের মতো রাশিয়া, আমেরিকা, ইসরায়েল – সবার সাথে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে হবে। সেটা না করে আপনি যদি এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ক্রাইসিসের গুরুত্ব বুঝতে না পেরে একেবারে ক্রিটিকাল মোমেন্টে এমন একটা সুপার পাওয়ারকে ক্ষেপিয়ে তোলেন, যারা যুগ যুগ ধরে আপনার দেশের এস্টাবলিশমেন্টের পেছনে টাকা ঢেলেছে, তাহলে হবে?
তাও তাদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলে আপনি আপনি এমন সুপার পাওয়ারের কাছে গেছেন, যারা আপনার বিপদে পাল্টা থ্রেট লেটার দেওয়া তো দূরের কথা, পাল্টা ভোট কিনতেও আপনাকে সাহায্য করল না – তো আপনার লাভটা কী হইলো?
ইমরান খানের পতনে আসলে দুঃখিত না হয়ে উপায় নাই। বাই বর্ন পাকিস্তান-বিদ্বেষী না হলে ইমরান খানকে অপছন্দ করারও কোনো যুক্তি নাই। তার অনেক ব্যর্থতা থাকতে পারে, কিন্তু তাকে সরিয়ে দিয়ে যারা আসছে, তারা যে আরও খারাপ, সেটা তো আগে থেকেই প্রমাণিত। কিন্তু তারপরেও একচেটিয়াভাবে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের উপর সব দায় না চাপিয়ে তার ব্যর্থতার কারণও খোঁজা উচিত।

