
ফটোকপিয়ার: পার্টি সংস্কৃতি এবং যৌন নিপীড়নের গল্প
দেখলাম নেটফ্লিক্সের ইন্দোনেশিয়ান মুভি ফটোকপিয়ার (Photocopier (2021)) পাওয়ারফুল কাহিনী। ক্রাইম, থ্রিলার, মিস্ট্রি জনরার।
ভার্সিটিতে পড়ুয়া এক মেয়ে, সুরিয়ানি তার নাট্যদলের সদস্যদের সাথে পুরস্কার পাওয়া উদযাপন করতে যায়। সেখানে সবার পাল্লায় পড়ে ড্রিংক করে অচেতন হয়ে পড়ে। রাত তিনটার সময় এক ড্রাইভার তাকে অচেতন, মাতাল অবস্থায় ঘরে পৌঁছে দিয়ে যায়।
পরদিনই কীভাবে যেন নেটে তার ড্রিঙ্ক করে অচেতন হয়ে পড়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে তার ভার্সিটির স্কলারশিপ বাতিল হয়ে যায়। ওদিকে রাত তিনটা বাজে অপরিচিত পুরুষ মাতাল অবস্থায় ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কারণে পড়া-প্রতিবেশীরাও নানান কথা বলতে থাকে। মুসলমান মেয়ে হয়ে এরকম আচরণ করায় সুরিয়ানিকে তার বাবা ঘর থেকে বের করে দেয়।
উপায়ান্তর না দেখে সুরিয়ানি তার এক ছেলে ফ্রেন্ড, নাট্যদলের ফটোকপিয়ারের দোকানে গিয়ে ওঠে। তার মনে নানান সন্দেহ জেগে উঠতে থাকে। শুধু দুই-তিন গ্লাস ড্রিংক করেই কি সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল? নাকি কেউ তার ড্রিঙ্কের সাথে কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল?
তাছাড়া তাকে পার্টি থেকে ট্যাক্সিতে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাত দুইটার সময়। অথচ সে ঘরে পৌঁছেছিল রাত তিনটার সময়। পার্টিতে যাওয়ার আগে সে যে জামা পরেছিল, ঘরে ফেরার পর সেই জামা উল্টা করে পরা ছিল কেন? মাঝখানে এক ঘণ্টা ট্যাক্সিওয়ালা তাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল? কী করেছিল? আর কে ছিল তার সাথে?
আরও পড়ুন: মিসরীয় নারীদের উপর যৌন নির্যাতন এবং তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কাহিনী নিয়ে নির্মিত কায়রো ৬,৭,৮ মুভির রিভিউ। এছাড়াআমার লেখা সকল মুভি রিভিউ এবং মুভি বিষয়ক আলোচনা পড়ুন এখান থেকে।
ফটোকপিয়ার ছেলেটার সাথে মিলে শুরু হয় সুরিয়ানির তদন্ত। সন্দেহের তালিকায় প্রথমেই নাট্যদলের ছেলে সদস্যরা …
উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের পার্টিতে যাওয়া, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বিপরীত লিঙ্গের সাথে মেলামেশা করা, এবং এরফলে বিভিন্ন ধরনের বিপদে পড়া বা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার যে সমস্যাটা বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে প্রকট হয়ে উঠছে, এই মুভিতে সেটা সুন্দরভাবে উঠে এসেছে।
ইন্দোনেশিয়ান মুভি হাতে গোণা তিন-চারটার বেশি দেখা হয়নি বলে পরিচালক বা কলাকুশলীদের কাউকে চিনি না। কিন্তু প্রায় সবাই চমৎকার অভিনয় করেছে। মুভির কাহিনী বেশ গতিশীল, এনগেজিং।
মুভিটা ইন্দোনেশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অনেকগুলো পুরস্কার পেয়েছে। বুসান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও বেস্ট পিকচার হিসেবে নমিনেশন পেয়েছিল। অস্কারে অবশ্য নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনার কথা তেমন কেউ বলছে না। তাছাড়া নেগেটিভের মধ্যে কয়েক জায়গায় সিলি কিছু মিসটেকও আছে।
বাট তারপরেও ভালো মুভি। রেকমেন্ডেড। পার্সোনাল রেটিং ৮/১০।

