-
ফিলিস্তিনের গল্প: দ্য স্টোরি অফ দ্য ল্যান্ড
মূল: সারাহ আলি, ভাষান্তর: মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা
আমি তার অশ্রুসিক্ত চোখের দিকে তাকালাম, এবং সেখানে সুখের মতো কিছু একটার দেখা পেয়ে আমি হাসলাম। যে মানুষটাকে আমি সব সময় বাবা হিসেবে জেনে এসেছি, আজ তিনি ফিরে এসেছেন।
আজ তাকে আর সেই অপরিচিত লোকটার মতো দেখাচ্ছে না, যাকে গত তিন বছর ধরে আমি পুরোপুরি চিনতে পারিনি। তাকে আর সেই ভুলোমনের স্থির মূর্তির মতো মনে হচ্ছে না, যিনি সব সময় দেয়ালের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন এবং বাড়ির কেউ যখন তাকে সম্বোধন করত, তখন অনাগ্রহের সাথে মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেন।
তিনি এখন এখানেই আছেন। তিনি এখানেই উপস্থিত আছেন। এবং আমি যখন আমার ভালো ফলাফল নিয়ে বড়াই করতে লাগলাম, তখন তিনি সত্যি সত্যিই সেটা শুনতে লাগলেন।
-
প্রত্যাবর্তন – হিশাম মাতার
২০১১ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্তও আমি (হিশাম মাতার) ভাবতে পারিনি, জীবনে কখনও লিবিয়ায় ফিরে যেতে পারব।
সে সময় আমি সবেমাত্র লন্ডন ছেড়ে নিউইয়র্কে গিয়ে উঠেছিলাম। আমার বাবা-মা প্রথম এই শহরটিতে এসেছিলেন ১৯৭০ সালের বসন্তকালে, যখন আমার বাবাকে জাতিসংঘে লিবিয়া মিশনের প্রথম সচিব হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই শরৎকালেই আমার জন্ম।
তিন বছর পর, ১৯৭৩ সালে আমরা ত্রিপোলিতে ফিরে যাই। এরপরেও আমি চার কি পাঁচবার নিউইয়র্কে গিয়েছিলাম, কিন্তু প্রতিবারই সংক্ষিপ্ত সফরে। কাজেই ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে যদিও আমি আমার জন্মস্থানেই গিয়ে উঠেছিলাম, কিন্তু এটি ছিল আমার কাছে প্রায় সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি শহর।
-
আমার প্রথম হ্যাকিংয়ের গল্প: এডওয়ার্ড স্নোডেন
আমার জীবনে প্রথম যে জিনিসটা আমি হ্যাক করেছিলাম, সেটা হচ্ছে সময়। ঘুমোতে যাওয়ার সময়।
আমার কাছে এটাকে খুবই অন্যায্য মনে হতো যে, আমার বাবা-মা নিজেরা কিংবা আমার বোন ঘুমোতে যাওয়ার আগেই আমাকে জোর করে ঘুমোতে পাঠাতেন – আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ার অনেক আগেই। এটা ছিল আমার প্রতি জীবনের প্রথম অবিচার।
-
ইসরায়েলের গোপন অপারেশনগুলো: প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ
১৯৪৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। জেরুজালেমের রুমানিয়ান চার্চের ব্রিটিশ ম্যাণ্ডেটের প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে এলেন ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেণ্টের (সিআইডি) বিশেষ ইহুদী বিভাগের কমাণ্ডার, টম উইলকিন। তার গন্তব্য ছিল সিআইডির নিকটবর্তী রাশিয়ান কম্পাউণ্ড, যেখানে ইহুদী গুপ্ত সংস্থাগুলোর সদস্যদেরকে আটক রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো।
অন্য সব সময়ের মতো সেদিনও উইলকিন সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার আগেই তিনি উঁকি মেরে দেখে নিয়েছিলেন রাস্তার দু’পাশ, এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে স্পর্শ করে রেখেছিলেন তার রিভলভারটি। কিন্তু তার জানার কথা ছিল না, একটু সামনের সেইন্ট জর্জ স্ট্রিটের এক অন্ধকার সরু গলির ভেতর তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওঁৎ পেতে ছিল কুখ্যাত ইহুদী সন্ত্রাসী সংগঠন ‘লেহি‘র এক সদস্য, ডেভিড শমরন।
লেহির অপারেশন বিভাগের প্রধান ইতজাক শামিরের নির্দেশে ডেভিড শমরন এবং ইয়াকভ বানাই টম উইলকিনের উপর হামলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছিলেন। জেরুজালেমের রুমানিয়ান চার্চের বাসভবনে উইলকিনের অবস্থান নিশ্চিত করার পর তারা তাদের অভিযান শুরু করেন।
-
আমেরিকার প্রথম রেজিম চেঞ্জ: হাওয়াইয়ের রানিকে ক্ষমতাচ্যুত করার কাহিনী
রাজা কালাকাউয়ার মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসার দুই বছরের মধ্যেই তার বোন, রানি লিলিউকালানি সিদ্ধান্ত নেন, স্বাধীন রাজ্য হাওয়াইয়ের জনগণের স্বার্থে তিনি নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন করবেন। উড়ে এসে জুড়ে বসা আমেরিকান এবং অন্যান্য ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গদের ক্ষমতা খর্বিত করে নতুন সংবিধানে তিনি ভোট দেওয়ার অধিকার দিবেন শুধুমাত্র হাওয়াইয়ান নাগরিকদেরকে।
রানি লিলিউকালানির এ সিদ্ধান্তটি ছিল শতাধিক বছর ধরে হাওয়াইয়ের অর্থনীতি এবং রাজনীতিকে কুক্ষিগত করে রাখা শ্বেতাঙ্গ এলিট সম্প্রদায়ের জন্য এক অশনি সংকেত। এই এলিট সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশই ছিল আমেরিকান বংশোদ্ভূত। কাজেই সেদিন রাতেই তাদের একটি দল গিয়ে হাজির হয় হাওয়াইয়ে নিযুক্ত আমেরিকান দূত, জন এল. স্টিভেনসের বাড়িতে।
স্টিভেন্সের বাসায় বসে তারা তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে – হাওয়াইয়ে যদি আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করতে হয়, তাহলে এখন তাদের একটাই করণীয় আছে। তারা রানি লিলিউকালানিকে উৎখাত করে স্বাধীন রাজ্য হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে টিকে থাকা হাওয়াইকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একীভূত করে নেবে। আর রেজিম চেঞ্জ তথা সরকার পরিবর্তনের পুরো ব্যাপারটিতে স্টিভেন্সের মাধ্যমে পেছন থেকে পূর্ণ সহায়তা দিয়ে যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সেনাবাহিনী।
-
প্রেসিডেন্ট মুরসি: যে বইয়ে স্থান পেয়েছে আমার দুটি লেখা
মিসরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির স্মরণে প্রচ্ছদ প্রকাশন একটি বই প্রকাশ করেছে। “প্রেসিডেন্ট মুরসি: আরব বসন্ত থেকে শাহাদাত” শিরোনামের বইটি ঠিক সেই অর্থে মুরসির জীবনী না। এতে মূলত মুরসির জীবনের বিভিন্ন দিকের উপর, বিশেষ করে তার রাষ্ট্রপ্রতিত্বের সময়ের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। বইটিতে আমার দুটি লেখাও স্থান পেয়েছে।
বইটিতে মোট ১৬টি লেখা আছে, মৌলিক এবং অনুবাদ মিলিয়ে। মৌলিক লেখকদের দুজন পরিচিত লেখক আছেন – ডঃ আব্দুস সালাম আজাদী এবং ফেসবুকে জনপ্রিয় রাজনৈতিক লেখক, মিসর প্রবাসী মোহাম্মদ নোমান ভাই।
-
মোহাম্মদ মুরসির অভিষেক
প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহাম্মদ মুরসির অভিষেক অনুষ্ঠানটি তার জন্য এর চেয়ে বেশি অপমানজনক হওয়া সম্ভব ছিল না।
নির্বাচনের দিন রাতে মুরসি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি বিলুপ্ত পার্লামেন্টকে পুনর্বহাল করবেন এবং সেই পার্লামেন্টের সামনেই শপথ গ্রহণ করবেন। কিন্তু মিলিটারি কাউন্সিল তাকে তার প্রতিজ্ঞা ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করে। অভিষেক অনুষ্ঠানের পূর্বে দুইজন জেনারেল টেলিভিশনে এক যৌথ বিবৃতিতে প্রতিজ্ঞা করেন, সামরিক বাহিনী সর্বদাই ব্যাপক ক্ষমতা সহকারে সরকারের পেছনে থেকে “বিশ্বস্ত অভিভাবক” হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাবে।
কী ধরনের “অভিভাবক”?
“আপনার যেভাবে খুশি ব্যাখ্যা করে নিন”, জানিয়েছিলেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আল-আসার।