-
দ্য প্রফেট: ইহুদী লেখিকার মুগ্ধ বর্ণনায় রাসুল (সা)-এর জীবনী
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন রোর বাংলার এই লিঙ্ক থেকে।
মূল বইটির লেখিকা লেজলি হ্যাজেলটন একজন অ্যাগন犀利士 স্টিক ইহুদী। অ্যাগনস্টিক শব্দের অর্থ হচ্ছে অজ্ঞেয়বাদী। অর্থাৎ যারা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত না। এই তথ্য শোনার পরেই যেকোনো মুসলমানের মনে হতে পারে, এমন একজন ব্যক্তি, যিনি একে ইহুদী, তার উপর অ্যাগনস্টিক, তিনি যখন রাসুল (সা) এর জীবনী লিখবেন, সেই জীবনী কি পড়া উচিত হবে? সেখানে তো নিশ্চয়ই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মিশ্রণ থাকবে, থাকবে ইহুদী দৃষ্টিভঙ্গি!
কিন্তু বইটি পড়লে বোঝা যায়, এই সন্দেহ পুরাই অমূলক। লেজলি হ্যাজেলটন এমনভাবে রাসুল (সা)-এর জীবনী তুলে ধরেছেন, অল্প কিছু জায়গা বাদে অধিকাংশ সময় পাঠকের মনেই হবে না যে তিনি ভিন্নধর্মী বা সংশয়বাদী কারো লেখা পড়ছেন।
(more…) -
মা হাওয়া কবরস্থান: যার নামানুসারে জেদ্দা শহরের নামকরণ
সৌদি আরবের জেদ্দা শহরের নামটি এসেছে জিদ্দাহ শব্দটি থেকে। আরবি জিদ্দাহ শব্দটির অর্থ দাদী। ধারণা করা হয়, মানবজাতির আদি মাতা (অথবা মানবজাতির দাদী) হযরত হাওয়া (আ)-এর আবাসভূমি ছিল এই জেদ্দা নগরী। অনেকের ধারণা, সেখান থেকেই শহরটির এই নামটি এসেছে।
যদিও কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই, কিন্তু স্থানীয় প্রাচীন লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, জেদ্দার বর্তমান আল-বালাদ এলাকার “মাক্ববারাত উম্মুনা হাওয়া” তথা “আমাদের মা হাওয়া” নামক কবরস্থানেই শায়িত আছেন হযরত হাওয়া। ইবনে বতুতাসহ বহু পর্যটক এবং ইতিহাসবিদের বর্ণনায় জেদ্দায় হযরত হাওয়ার কবরের উপস্থিতি এবং সেটা নিয়ে মানুষের আগ্রহের কথা জানা যায়।
-
মুসা (আ) এর ১২ গুপ্তচর: বিশ্বের সর্বপ্রথম গোয়েন্দাগিরির ইতিহাস
ইতিহাসের প্রথম গুপ্তচর কে ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। চাইনিজ সমরবিদ সান জু এবং ভারতীয় দার্শনিক চাণক্যের লেখায় গুপ্তচরবৃত্তির কৌশল সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু এগুলো মাত্র ২,৪০০ থেকে ২,৫০০ বছর আগেকার কাহিনী।
তাদের আগে কি গুপ্তচরবৃত্তি ছিল না? নিশ্চয়ই ছিল। লিখিত ইতিহাস পাওয়া না গেলেও মানব সভ্যতার আদিকাল থেকেই গুপ্তচরবৃত্তির চল থাকার কথা।
লিখিত আকারে বিশ্বের প্রাচীনতম গুপ্তচরদের সন্ধান পাওয়া যায় ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত তথা ওল্ড টেস্টামেন্টের প্রথম পাঁচটি বইয়ের চতুর্থ বইয়ে। এবং সরাসরি না হলেও মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনেও পরোক্ষভাবে এই কাহিনীর ইঙ্গিত দেওয়া আছে।
-
দাজ্জালের আবির্ভাবের পটভূমি: শেখ ডঃ ইয়াসির ক্বাদি
করোনাভাইরাসের বিস্তারের পর থেকেই আবার নতুন করে অনেকে এই প্রশ্নটা করছে – এটা কি দাজ্জালের কাজ? দাজ্জাল জিনিসটাই বা কী? আসলেই কি দাজ্জাল নামে কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে? কোথায় আছে এই দাজ্জাল? অথবা কবে আবির্ভাব ঘটবে দাজ্জালের?
বলে রাখি, এসব বিষয়ে আমার এমন গভীর জ্ঞান নেই যে, আমি নিজেই মৌলিক কোনো লেখা লিখব। কাজেই আমি আমি যে লেখাটা লিখছি, সেটা মূলত শেখ ডঃ ইয়াসির ক্বাদির একাধিক লেকচার থেকে নেওয়া তথ্যের ভাবানুবাদ। উপস্থাপনের সুবিধার জন্য আমি নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছি, সিরিয়াল আগেপরে করেছি, কিন্তু তথ্য এবং উদাহরণগুলো সব ইয়াসির ক্বাদির লেকচার থেকেই নেওয়া।
-
দ্য ম্যাসেজ: গাদ্দাফির কল্যাণে যেভাবে আলোর মুখ দেখেছিল সিনেমাটি
হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জীবনী নিয়ে নির্মিত দ্য ম্যাসেজ (The Message) তথা আর-রিসালাহ মুভিতে বদরের যুদ্ধের একটা সিন আছে। সেখানে যুদ্ধের পূর্বে মুসলমানদেরকে একটা কুয়া থেকে পানি তুলতে দেখা যায়। বিখ্যাত লিবিয়ান পর্যটক ওসামা থিনির পোস্ট অনুযায়ী, ফিচার ইমেজের ছবির এই জিনিসটাই হচ্ছে সেই কুয়াটা। জায়গাটা লিবিয়ার দক্ষিণে ওবারি শহরের নিকটে, সাহারা মরুভূমিতে।
-
ইতিহাসে হজ্ব বাতিলের ঘটনা
করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরব এ বছর হজ্ব বাতিল করার কথা বিবেচনা করছে। এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সৌদি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আল্লাহ্ না করুক, যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে হজ্ব বাতিল হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে। সৌদি হজমন্ত্রী মানুষকে এখনই হজের প্রস্তুতি নিতে নিষেধ করেছেন।
-
কাবা চত্বর বন্ধ: সৌদি আরবের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত!
সৌদি শাসকদের এবং তাদের অনুগত আলেমদের প্রচুর সমালোচনা করেছি, এবং ভবিষ্যতেও করব, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের একটা স্টেপের প্রশংসা না করলে সেটা অন্যায় হবে। সেটা হচ্ছে তাদের উমরাহ বন্ধ করে দেওয়ার মতো, সাময়িকভাবে কাবা চত্বর বন্ধ করে দেওয়ার মতো বোল্ড সিদ্ধান্ত।
প্রতি বছর সৌদি আরবে ৯ মিলিয়নের মতো মানুষ উমরাহ এবং হজ্ব পালন করতে যায়। এর মধ্যে শুধু রমজান মাসেই যায় প্রায় ২ মিলিয়ন। আর জিলহজ্ব মাসে যায় প্রায় ৩ মিলিয়ন। উমরাহকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবে বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে। এটা শুধু ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত কিংডম অফ সৌদি অ্যারাবিয়ার ক্ষেত্রেই সত্য না, ইসমাঈল (আ) এর আমল থেকেই এটা সত্য।
-
এক কবির কাছে খলিফা আল-মানসুর যেভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন
আবু জাফর আল-মানসুর ছিলেন দ্বিতীয় আব্বাসীয় খলিফা, যিনি প্রধানত খলিফা আল-মানসুর নামেই পরিচিত। কথিত আছে, তিনি কবিদের উপর বেশ ক্ষিপ্ত ছিলেন। কারণ তার মতে কবিরা যেভাবে শুধু কয়েক লাইন কবিতা শুনিয়ে শাসকদেরকে খুশি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে নিত, তার দৃষ্টিতে তা ছিল পুরো ডাকাতি।
তো কবিদেরকে জব্দ করার জন্য তিনি এক অভিনব নিয়ম চালু করেছিলেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোনো কবির কবিতা যদি সম্পূর্ণ নতুন না হয়, তাহলে তিনি তাকে এক পয়সাও দিবেন না, উল্টো রাজদরবারে তার কবিতা আবৃত্তি করার অধিকার রহিত করে দিবেন। কিন্তু যদি কেউ সম্পূর্ণ নতুন কবিতা শোনাতে পারে, তাহলে কবিতাটার ওজনের সমমূল্যের স্বর্ণমুদ্রা তাকে উপহার দিবেন।
খুব সহজ শর্ত মনে হচ্ছে? মোটেই না। কারণ আল-মানসুর ছিলেন অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী। যেকোনো কবিতা তিনি একবার শুনেই হুবহু মুখস্ত বলে দিতে পারতেন। ফলে যে কবিই তাকে নতুন লেখা কবিতা শোনাতে আসত, একবার শোনার পরেই তিনি বলতেন – এই কবিতা তো আমি আগেই শুনেছি! এই যে দেখ, এটা আমার হুবহু মুখস্ত আছে!
-
কর্দোভার খ্রিস্টান শহিদরা: ডঃ ইয়াসির ক্বাদি
বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার ডঃ ইয়াসির ক্বাদি আজকে অদ্ভুত এবং চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন – “ক্রিশ্চিয়ান মার্টায়ার্স অফ কর্দোভা”। এই লেখাটা তারই অনুবাদ।
৮৫০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী কয়েকশো বছর পর্যন্ত আন্দালুসে এক অদ্ভুত ব্যাপার ঘটছিল। খ্রিস্ট ধর্মগুরুদের অনেকে সে সময় শহরের কেন্দ্রে অথবা মসজিদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হতো, এরপর আল্লাহ্কে বা মুহাম্মাদ (সা)-কে প্রকাশ্যে জঘন্য ভাষায় গালাগালি করত।
তারা জানত এই ধরনের গালাগালির শাস্তি কারাগার অথবা মৃত্যুদণ্ড, কিন্তু তারপরেও তারা এই কাজ করত। ধারণা করা হয় সে সময় এরকম কাজের জন্য প্রায় ৫০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, বা তাদের ভাষায় এরকম ৫০ জন খ্রিস্টান ধর্মগুরু “শহিদ” হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এমনিতে যারা সমাজের সবচেয়ে জ্ঞানী এবং সম্মানিত (তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে) হিসেবে বিবেচিত, কেন তারা এরকম অদ্ভুত আচরণ করত?
-
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ: কিছু নির্মোহ পয়েন্ট
পড়লাম বহুল আলোচিত-সমালোচিত বই – আরিফ আজাদের প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ম পর্ব। এটাকে প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদের ঠিক রিভিউ বলা যাবে না, এটা জাস্ট আবেগ বর্জিত কয়েকটা পয়েন্টে আমার পাঠ প্রতিক্রিয়া:
১। বইয়ের কয়েকটা চ্যাপ্টার বেশ ভালো। বিশেষত যেসব চ্যাপ্টারে বিজ্ঞান নেই, শুধু দর্শন আছে, সেগুলো ভালো। সবচেয়ে ভালো সেসব অধ্যায়, যেগুলোতে কুরআনের মোজেজা বা কুরআন সম্পর্কে নাস্তিকদের সিলি প্রশ্নের জবাব তুলে ধরা হয়েছে। যেমন জুলকারনাইনের পঙ্কিল জলাশয়ে সূর্যাস্ত, নারী মৌমাছি, মুসা (আ) বনাম ইউসুফ (আ) এর বাদশাহ টাইটেল এগুলো।
এগুলো অবশ্য জানা বিষয়। আরিফ আজাদ নিজে আবিষ্কার করেননি, সেটা তিনি দাবিও করেননি। কোনো টপিকের উপর বিভিন্ন স্থানে থাকা তথ্য নিজের ভাষায় লিখে, একত্রিত করে বই প্রকাশ করাটাও কৃতিত্বের কাজ। আর আমরা যারা ব্লগে বিচরণ করে বড় হয়েছি, তাদের কাছে এগুলো জানা হলেও নতুন পাঠকদের অনেকের কাছেই অজানা হতে পারে। তারা এই টপিকগুলো থেকে উপকৃত হবে।