ক্রিমিনালোজি বিশ্বের ইতিহাসে ১ ফেব্রুয়ারি তারিখটা একটা ঐতিহাসিক কালো দিবস হয়ে থাকবে।
১২৮ বছর ধরে যে প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে দুনিয়ার তাবৎ ইনভেস্টিগেটররা তাদের তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে, দুনিয়ার সব ধরনের আদালত যে প্রযুক্তির উপর বিশ্বাস রেখে রায় দিয়েছে, আজ সেই প্রযুক্তি একেবারে তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়েছে।
দুনিয়ার ক্রিমিনালোজিস্টরা আজ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আর দুনিয়ার বাঘা বাঘা অপরাধীরা আজ নতুন করে স্বপ্ন দেখছে – এই প্রযুক্তি ভ্রান্ত প্রমাণিত হওয়ায় তারা এখন নতুন করে আপিল করতে পারবে।
বলছিলাম ফিঙ্গার প্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন প্রযুক্তির কথা। ১৮৯২ সালে এক আর্জেন্টাইন পুলিশ ইনস্পেক্টর এই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, সারা দুনিয়ায় এই মুহূর্তে যত মানুষ আছে, অতীতে যত মানুষ এসেছে, এবং ভবিষ্যতে যত মানুষ আসবে, তাদের কারো ফিঙ্গার প্রিন্ট অন্য কারো ফিঙ্গার প্রিন্টের সাথে মিলবে না। ফিঙ্গার প্রিন্ট হচ্ছে প্রতিটা মানুষের ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন মার্ক।
আরো পড়ুন: সরকারি কর্মকর্তাদেরকে খুবজা খাওয়ার জন্য লিবিয়ায় আসার আমন্ত্রণ
এতো বছর ধরে তার ঐ আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে অপরাধীদের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য সারা দুনিয়াজুড়ে এই ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। কিন্তু আজ সেই প্রযুক্তি ভ্রান্ত প্রতিপন্ন হয়ে গেল। আর এই প্রযুক্তির এই ভয়াবহ ত্রুটি চিহ্নিত করার সুযোগ আমাদেরকে কে করে দিয়েছে? কে দিয়েছে?
কী ভাবছেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? না, ভুল উত্তর। সঠিক উত্তর হচ্ছে, ডঃ কামাল হোসেন।
জ্বী, ডক্টর কামাল হোসেন যদি আজ ভোট দিতে না যেতেন, তাহলে সারা দুনিয়া এই প্রযুক্তির এই ভয়াবহ ত্রুটির কথা জানতেই পারত না। কিন্তু উনি ভোট দিতে গিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে দিয়েছেন, উনার আঙ্গুলের ছাপ আর এক নির্বাচনী নারী কর্মকর্তার আঙ্গুলের ছাপ হুবহু একই!
বাংলাদেশ এখনও এই আবিষ্কারের গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ এই ভিডিও নিয়ে ট্রোল করছে, হাসাহাসি করছে, এর পেছনে কোনো অলৌকিক ব্যাখ্যা আছে কিনা, সেটাও খোঁজার চেষ্টা করছে। কিন্তু গোপন তথ্য অনুযায়ী ওদিকে সিআইএ, এফবিআই, মোসাদসহ দুনিয়ার তাবৎ গোয়ন্দা সংস্থাগুলো তাদের হেডকোয়ার্টারে জরুরী মিটিংয়ে এই ভিডিও নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, এটা এতোই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, মোসাদের পরিচালক নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, এই আবিষ্কারের জন্য আগামী বছর হয়তো নোবেল কমিটি ক্রিমিনালোজি বিভাগেও শান্তি পুরস্কারের প্রবর্তন করতে পারে।
এবং স্বাভাবিকভাবেই সেই পুরস্কার দেওয়া হবে … কী ভাবছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে? স্যরি, আবারও ভুল উত্তর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হলে আমি খুবই খুশি হতাম। কিন্তু মোসাদের পরিচালক নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ঐ পুরস্কার যৌথভাবে দেওয়া হবে ডক্টর কামাল হোসেনকে এবং ঐ নির্বাচনী নারী কর্মকর্তাকে 🙁
বাইদ্যওয়ে, গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর কথা যখন উঠলই, তখন জানিয়ে রাখি, এই বইমেলায় আমার একটা বই বেরিয়েছে, নাম স্পাই স্টোরিজ 🙂
এটা হচ্ছে এসপিওনাজ জগতের সত্যিকার স্পাইদের ছয়টা কাহিনি নিয়ে লেখা একটা নন-ফিকশন থ্রিলার। বিস্তারিত জানতে পারবেন এই লিঙ্ক থেকে। আর রকমারি থেকে অর্ডার করতে পারবেন এখান থেকে: https://bit.ly/38Tq1sA