এই লেখাটা লিখেছিলাম প্রধানত রোর বাংলা যখন লেখক নেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, তখন। যদিও সে সময় আমি জাস্ট একজন লেখক ছিলাম, রোর বাংলা ওয়েব সাইটের সম্পাদকীয় প্যানেলের কেউ ছিলাম না, তারপরেও প্রতিবারই রোর বাংলা লেখক চাই বিজ্ঞাপন শেয়ার করার পর পরিচিত-অপরিচিত অনেকে ইনবক্সে যোগাযোগ করত। বিভিন্ন টিপস জানতে চাইত। অনেকে বিজ্ঞাপন ছাড়াও এমনিতেই নিজের লেখার স্যাম্পল পাঠাত সম্পাদকদের কাছে পাঠানোর জন্য।
তো সেজন্যই এই লেখাটা লিখেছিলাম। যারা রোর বাংলা বা এই জাতীয় যেকোনো সাইটে লিখতে আগ্রহী, আশা করি তাদের কাজে লাগবে। যদিও আমি লেখক নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত নই, কিন্তু যেহেতু আমি নিজেও স্যাম্পল পাঠিয়েই নির্বাচিত হয়েছি এবং এরপর অনেকের স্যাম্পলকে রিজেক্ট হতে দেখেছি, তাই আমার ধারণা এ ব্যাপারে আমার মোটামুটি ভালো একটা আইডিয়া তৈরি হয়েছে।
খুব বেশি সিরিয়াসলি নেওয়ার অবশ্য দরকার নাই। এটা কোনো অ্যাকাডেমিক গবেষণা না। জাস্ট ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং পর্যবেক্ষণ থেকে লেখা। তবে এসব ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মূল্যও অবশ্য কম না। এবং যদিও শুধু রোর বাংলার কথা আলোচনা করেছি, কিন্তু আমার বিশ্বাস এই টিপসগুলো অধিকাংশ সাইটের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
রোর বাংলায় প্রকাশিত আমার সবগুলো ফিচার আর্টিকেল পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।
১। নিয়মিত রোর বাংলা পড়ুন
আপনি রোর বাংলা পড়েন না, রোর বাংলার পেজে আপনার লাইক নাই, হঠাৎ একটা বিজ্ঞাপন দেখেই আপনি ঝটপট একটা লেখা লিখে পাঠিয়ে দিলেন। কী ভাবছেন, কেল্লা ফতে? হতেই পারে, যদি আপনার লেখনী অসাধারণ হয় এবং একইসাথে আপনার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। কিন্তু অধিকাংশক্ষেত্রেই আপনি সরাসরি বাদ পড়ে যাবেন।
কেন? কারণ প্রতিটা সাইটের লেখার একটা নিজস্ব স্টাইল থাকে, টোন থাকে। প্রথম আলোর কলাম আর রোরের ফিচার আর্টিকেল এক রকম না। রোরের আর্টিকেল আর এগিয়ে চলোর আর্টিকেল এক রকম না। কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ, সেটা বলছি না, বাট আপনি একটার জন্য লিখে হুবহু আরেকটাতে পাঠিয়ে দিলে সেটা সরাসরি বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কোনো সাইটের আর্টিকেলের স্টাইল কীভাবে বুঝতে পারবেন? নিয়মিত কয়েক মাস সেই সাইটের বিভিন্ন লেখা পড়তে হবে। তাহলে এক সময় নিজের অজান্তেই আপনি বুঝতে পারবেন, এই সাইটে ঠিক কী ধরনের বিষয়বস্তুর, কী ধরনের আদর্শগত অবস্থানের, কী ধরনের বর্ণনাভঙ্গির লেখা সহজে অ্যাপ্রুভ হয়।
যেমন ধরুন আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য। আপনি যদি নিয়মিত রোর বাংলা পড়েন, তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন এখানে এক থেকে দেড় হাজার ওয়ার্ডের মধ্যের লেখা বেশি পাবলিশ হয়। এখন এটা খেয়াল না করে আপনি যদি মনের মাধুরী মিশিয়ে পাঁচ হাজার ওয়ার্ডের একটা লেখা পাঠিয়ে দেন, তাহলে সম্ভাবনা আছে সম্পাদকরা ওটা পুরোটা না পড়েই ফেলে দিবে। আর যদি চার-পাঁচশ ওয়ার্ডের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মতো লেখা পাঠান, তাহলে সেটা নিশ্চিতভাবেই ডাস্টবিনে জমা পড়বে।
২। সঠিক বিষয়বস্তু নির্বাচন করুন
এবার অবশ্য রোর বাংলা নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরিতে লেখা আহ্বান করেছে। কিন্তু এমনিতে বিষয়বস্তু উন্মুক্ত থাকে। আপনি সারা বছরই পছন্দের যেকোনো বিষয়ে স্যাম্পল একটা লেখা লিখে পাঠাতে পারেন। কিন্তু কী লিখবেন? আপনি শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার প্রচণ্ড ফ্যান। সুযোগ পাওয়া মাত্রই এদের একজনের জীবনী লিখে, অথবা অপরজনের সমালোচনা লিখে পাঠিয়ে দিবেন? সরাসরি রিজেক্ট খাবেন।
কেন? প্রথমত রোরে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে লেখতে অনুৎসাহিত করা হয়। দ্বিতীয়ত প্রথম লেখা কোনো বিতর্কিত বিষয়ে না লেখাই ভালো। স্যাম্পল লেখাটা এমন কোনো টপিকে লিখতে চেষ্টা করবেন, যেটা খুবই ইন্টারেস্টিং, কিন্তু মোটেও বিতর্কিত না, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক টপিক না। আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে রোরে লেখা যায়, কিন্তু এক্ষেত্রেও এটা অ্যাভয়েড করাই ভালো।
যেমন ধরুন আপনি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়ে প্রচণ্ড আবেগী এবং চমৎকার একটা লেখা দিলেন, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই বাশারের প্রচণ্ড সমালোচনা করলেন, আর লেখাটা গিয়ে পড়ল বামপন্থী/রাশিয়াপন্থী/বাশারপন্থী একজন সম্পাদকের হাতে। উনি যতই নিরপেক্ষভাবে যাচাইয়ের চেষ্টা করেন, তার অবচেতন মন যে সেটাতে বাধা দিবে না, সেটার নিশ্চয়তা কী? আপনার প্রথম লেখাটার বিষয়বস্তু হতে হবে এমন, যেটার শিরোনাম পড়েই যেন সম্পাদক ইন্টারেস্টেড হবেন এবং সম্পাদকের আদর্শগত, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অবস্থান যা-ই হোক না কেন, আপনার লেখা তার ঊর্ধ্বে থাকবে।
বছর দুয়েক আগে আমাকে একজনে একটা স্যাম্পল লেখা পাঠিয়েছিল রোরে দেওয়ার জন্য। লেখার শিরোনাম ছিল “জ্বীন তাড়ানোর তিনটি উপায়”। আমি আজ পর্যন্তও বুঝতে পারিনি, ওটা সিরিয়াস ছিল, নাকি প্র্যাঙ্ক ছিল। সিরিয়াসলি, উনার কেন মনে হয়েছে, রোর বাংলায় এই লেখাটা প্রকাশিত হতে পারে?
আমার নতুন বই!!!
স্পাই স্টোরিজ ২: স্নায়ুযুদ্ধের সফলতম ডাবল এজেন্টের কাহিনি
অবিশ্বাস্য সত্য ঘটনা অবলম্বনে ননফিকশন স্পাই থ্রিলার। উচ্চপদস্থ এক ডাবল এজেন্টের কাছে ১৫ বছর ধরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নাস্তানাবুদ হওয়ার কাহিনি।
পাবেন রকমারি ডট কমে (22% ছাড়ে), প্রকাশনীর ফেসবুক পেজ (25% ছাড়ে) এবং আপনার পছন্দের যেকোনো অনলাইন বুকশপে।
৩। প্রচুর পরিশ্রম করুন
বিজ্ঞাপন দেখলেন, আর আধঘণ্টার মধ্যে একটা লেখা লিখে সাবমিট করে দিলেন? ভাই, আপনি জিনিয়াস। কিন্তু যদি আসলেই জিনিয়াস না হন, তাহলে আপনার চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
এ কথা সত্য, এরকম জিনিয়াস লেখক অনেকেই আছেন। আমি রোরের অন্তত একজন লেখককে চিনি, যে একদিনে তিন-চারটা লেখা লিখে ফেলতে পারে, এবং সেটা কোয়ালিটি মেইন্টেইন করেই। কিন্তু সবার দ্বারা তো এটা সম্ভব না। যদি আপনি আর দশজনের মতো মোটামুটি ভালো মানের লেখক হন, তাহলে আপনাকে রোরে চান্স পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। প্রচণ্ড খেটেখুটে এমন একটা ওয়েল রিসার্চড, ওয়েল রেফারেন্সড লেখা লিখতে হবে, যেটা পড়ে সম্পাদকরা মুগ্ধ হতে বাধ্য।
আমি কীভাবে রোরে চান্স পেয়েছিলাম? আমার প্রথম আর্টিকেলটা ছিল, “সাইফ গাদ্দাফিই কি হচ্ছেন লিবিয়ার ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট“? আমার সারাদিনই কাটে লিবিয়ার পলিটিক্স নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে। কিন্তু তারপরেও এই লেখাটা লিখতে আমি সময় নিয়েছিলাম পুরো পাঁচ দিন। বলা হয়েছিল ৯০০ ওয়ার্ড হলেই চলবে, কিন্তু আমি লিখেছিলাম প্রায় ১,৫০০ ওয়ার্ড।
গুগল সার্চের প্রথম পৃষ্ঠা না শুধু, দশ-বারোটা কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রতিটা সার্চে সাত-আট পৃষ্ঠা পর্যন্ত ওপেন করে অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা আর্টিকেল পড়েছিলাম। এরপর সেগুলোর অন্তত ৩০টা থেকে তথ্য নিয়ে, প্রতিটার রেফারেন্স যোগ করে যে লেখাটা লিখেছিলাম, আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম, আমার লেখা যদি কেউ শিরোনাম দেখেই ফেলে না দিয়ে আগাগোড়া পড়ে থাকে, তাহলে সে আমাকে রিজেক্ট করতে পারবে না।
হ্যাঁ, একবার লেখক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য আর এতো কষ্ট করতে হয় না। তখন যেকোনো লেখার জন্য ভালো ভালো চার-পাঁচটা আর্টিকেল পড়াই যথেষ্ট। কিন্তু প্রথম লেখাতেই আপনি যদি মাত্র একটা একটা-দুইটা আর্টিকেল থেকে তথ্য নিয়ে সেটাকে “অনুবাদ” করে পাঠিয়ে দেন, তাহলে ফার্স্ট ইম্প্রেশনটা ভালো হওয়ার কোনো কারণ নেই।
৪। লেখায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখুন
এটা মূলত পলিটিক্যাল পোস্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু ইতিহাস, প্রযুক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্রেও এটা মাঝে মাঝে কাজে লাগে। আপনি যদি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকেন, তাহলে এটা বুঝতে পারবেন। মাঝেই মাঝেই লক্ষ্য করবেন, একই বিষয়ের উপর আমি ফেসবুকেও স্ট্যাটাস দিচ্ছি, এরপর সেটা নিয়ে রোর বাংলায়ও লিখছি। কিন্তু দুই লেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য।
ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো রাজনৈতিক নেতাকে, কোনো আদর্শকে পছন্দ করতে না পারি, ফেসবুকের স্ট্যাটাসে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনামূলক, কিংবা বিদ্রূপাত্মক ভাষা ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু রোরে আমার লেখা হবে অনেকটাই সফট টোনের। সেখানে লেখার সময় আমি ব্যক্তিগত আবেগকে অনেকটা চেপে রেখে তথ্যমূলক লেখাই লিখব। যেমন ধরুন আমি ব্যক্তিগত স্ট্যাটাসে এরদোয়ানের বা পুতিনের লিবিয়া অপারেশনের প্রচণ্ড সমালোচনা করতে পারি, কিন্তু রোরে লিখলে আমাকে তাদের এই অবস্থানের পেছনের কারণগুলো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে হবে।
বিতর্কিত কোনো টপিকে লেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো একটা টিপস হচ্ছে বিপরীত মতাদর্শের লেখাও পড়ে নেওয়া। আপনি জানেন সিরিয়ার ব্যাপারে আরটি পুরাই প্রোপাগান্ডা চালায়, কিন্তু সিরিয়ার উপরে কোনো লেখার আগে আপনার একবার হলেও আরটি দেখে নেওয়া উচিত, তারা কী বলছে। আপনি জানেন, প্রচলিত গ্রহণযোগ্য মত অনুযায়ী সাদ্দাম-গাদ্দাফি প্রচণ্ড স্বৈরাচার, কিন্তু তাদের উপর লেখার আগে আপনার উচিত তাদের পক্ষের নন-মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার দুই-একটা লেখাও পড়ে দেখা এবং কোনো পক্ষের অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে না লিখে বরং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক হিসেবে লেখার চেষ্টা করা।
পলিটিক্সের বাইরে আপনি যখন টেসলা-এডিসন দ্বন্দ্ব জাতীয় বিষয়গুলো নিয়ে লিখবেন, তখনও এই টিপস ফলো করতে পারেন।
৫। সোর্স ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
ইন্টারনেটে কোনো কিছু পাওয়া গেলেই সেটা সত্য হয় না। গুগল সার্চ করলে অনেক রেজাল্টই আসতে পারে, কিন্তু সেগুলোর সবগুলোকে আপনি নিজের লেখায় সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন না। আপনাকে বিশ্বাসযোগ্য সোর্স চিনতে হবে।
এটা অবশ্য সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। দীর্ঘদিন ধরে ঠেকে ঠেকে এটা আপনাকে শিখতে হবে। কিন্তু আপাতত যেটা বলে রাখতে পারি, সেটা হচ্ছে ডেইলি মেইল, মিরর জাতীয় সাইটগুলো রেফারেন্স হিসেবে কখনোই ব্যবহার করবেন না। খুবই প্রতিষ্ঠিত এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব না হলে কারো ব্যক্তিগত ব্লগকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন না। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র ইরানি সোর্স, ইরানের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র সৌদি সোর্স ব্যবহার করবেন না। এবং অচেনা কোনো সাইট হলে গুগলে গিয়ে how reliable is অমুক সাইট লিখে সার্চ করে দেখবেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, উইকিপিডিয়াকে কখনোই রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন না। জ্বী, আবারও বলছি, উইকিপিডিয়াকে কখনোই রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন না। উইকিপিডিয়াতে যে কেউ যেকোনো ধরনের তথ্য যোগ করতে পারে, এবং মডারেটরদের চোখে পড়ার আগ পর্যন্ত সেই মিথ্যা তথ্য সেখানে দীর্ঘদিন পর্যন্ত থেকে যেতে পারে। উইকিতে কোনো তথ্য পেলে সেখানে যে এক্সটার্নাল লিঙ্ক দেওয়া আছে, সেই লিঙ্কে ঢুকে সেটা পড়ে দেখবেন, এরপর বিশ্বাসযোগ্য মনে হলে সেটাকে যুক্ত করবেন।
আমার সবগুলো বই
৬। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইমেজ ক্লিন রাখুন
এর সাথে অবশ্য আপনার লেখার বৈশিষ্ট্যের কোনো সম্পর্ক নেই। এবং রোরের সম্পাদকরা আসলেই এটা চেক করে কি না জানা নেই। কিন্তু দায়িত্ব যদি আমার উপর পড়ত, তাহলে আমি নিঃসন্দেহে চেক করতাম। ধরুন আপনি খুব সুন্দর একটা আর্টিকেল লিখে পাঠালেন। কিন্তু সম্পাদকদের কেউ একজন আপনার ফেসবুক ওয়ালে এসে দেখল, আপনি ঘণ্টায় ঘণ্টায় শুধু অশ্লীল মিম আর ভিডিও শেয়ার দিচ্ছেন। অথবা আপনি প্রচণ্ড ফ্যাসিবাদী বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উস্কে দিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। আপনার কী মনে হয়, আপনাকে নেওয়া হবে?
আমি হলে নিতাম না। কারণ এতে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে। মানুষ আপনাকে গালি দিতে গিয়ে বলবে “রোর বাংলার লেখক”। সো আপনার ওয়ালে এরকম কিছু থাকলে আপনার লেখা ভালো হলেও টেকার সম্ভাবনা কম। সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যেদিন লেখার স্যাম্পল পাঠালেন, তার আগে এক সপ্তাহ এবং পরে এক সপ্তাহ পর্যন্ত আর্টিকেলের টিপসগুলো অনুসরণ করেই সুন্দর সুন্দর স্ট্যাটাস দিলে, আর না পারলে জাস্ট ঘাস-ফুল-লতা-পাতা টাইপের স্ট্যাটাস দিলে 🙂
আপাতত এই ছয়টা টিপসই থাকুক। পাঠকদের ফিডব্যাকের প্রেক্ষিতে নতুন কোনো টিপস মাথায় এলে সেটা যোগ করে দিবো। এর বাইরে কী ধরনের ফিচার ইমেজ ব্যবহার করতে হবে, লেখায় কয়টা ছবি থাকতে হবে, এ সংক্রান্ত সাধারণ শর্ত তো লেখক চাই বিজ্ঞাপনের সাথেই দেওয়া থাকে, সেগুলোও ফলো করতে পারেন।
মনোযোগের সাথে পুরো লেখাটা পড়লাম। যদিও রোর বাংলার লেখক হওয়ার ইচ্ছে নেই। পড়লাম, লেখালেখির কৌশল শেখার জন্য এবং আপনি কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে লেখেন তা বুঝানোর জন্য।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। রোরকে ফোকাস করলেও অধিকাংশ পয়েন্টই আসলে জেনারেল। সবারই কাজে লাগবে।
তোহা ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,,বরাবরের মত আপনি নতুন লেখকদের পথিকৃৎ
খুব মন দিয়ে পড়লাম৷ উপকার হবে বলে বোধ করছি৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷
এ সুযোগে একটি জিজ্ঞাসা— রোরে লেখার ইচ্ছা রাখি৷ তবে আমার আগ্রহের বিষয়— ইসলামি ব্যক্তিত্ব৷ বিশেষ করে বাংলাদেশে যারা ইসলাম প্রচারে নিবেদিত ছিলেন৷ যেমন একজনের কথা বলি— মুনশি মেহেরুল্লাহ৷ তাঁকে নিয়ে কিংবা অন্য কোন ইসলামি মনিষীকে নিয়ে রোরে আর্টিকেল দেয়া উচিত হবে কিনা! কিংবা তারা কতোটা মূল্যায়ন করবে এসব আর্টিকেল?
আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে৷ ভালো থাকবেন৷
হ্যাঁ। ইসলামি ব্যক্তিত্বকে নিয়ে লেখা অ্যাপ্রুভ করা হয়। আমার নিজেরও আন্দালুসীয় কয়েকজনের উপর লেখা আছে, ইয়াসির কাদির একটা লেকচারের অনুবাদ আছে। অন্য কয়েকজন লেখকেরও বাংলার ইসলামি ব্যক্তিত্বকে নিয়ে লেখা আছে। এক্ষেত্রে রেফারেন্স (বিশেষ করে বইের নাম, পৃষ্ঠা) নিচে রেফারেন্স হিসেবে দিয়ে দিতে হবে।
ঐতিহাসিক লিখা লিখলে কি পত্রিকা থেকে তথ্য ব্যবহার করা যেতে পারে? অনেক ধন্যবাদ এরকম লেখা লেখার জন্য । বিশেষ করে আপনার থেকে এরকম কিছু টিপস পেয়ে কৃতজ্ঞ!
ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য। হ্যাঁ পত্রিকা থেকেও নেওয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে পত্রিকার সুনাম এবং গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টা এবং রিপোর্টটার ধরন মাথায় রাখতে হবে। যেমন যদি মতামত বিভাগের লেখা হয়, সেটা গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। কিন্তু যদি ফিচার আর্টিকেল হয়, লেখকের গ্রহণযোগ্যতা থাকে, তাহলে সেটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। ভুইফোঁড় প্রচুর পত্রিকা আছে, সেগুলোর লিঙ্ক গ্রহণযোগ্য না। ব্যাপারটা আসলে জটিল। সায়েন্স তো না।
আচ্ছা,বেশ কিছু টপিকের ওপর লিখতে বলছে, তো একটা লেখায় পাঠাবো নাকি আলাদা আলাদা টপিকের ওপর কয়েকটা লেখা পাঠাবো?
মানে একটা জিমেইল থেকে কয়েকটা লেখা পাঠালে কি রিজেক্ট হয়ে যাবে?
এইটা তো জানি না 🙂 তবে রিজেক্ট হবে বলে মনে হয় না।
এমনিতে একসাথে সবগুলো না দিলেও সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও কিন্তু কন্ট্রিবিউটর সেকশনে গিয়ে লেখা জমা দেওয়ার সুযোগ থাকে। সেক্ষেত্রে লেখা ভালো হলে পাবলিশড হবে (ফ্রি, কন্ট্রিবিউটরদেরকে সম্মানী দেওয়া হয় না)। এরকম কয়েকটা পাবলিশ হলে সম্পাদকরা ইন্টারেস্টেড হয়ে সেই কন্ট্রিবিউটরকে নিয়মিত লেখক হিসেবে নিয়ে আসতে পারে।
ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। সেভ করে রাখলাম?
আমি সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত হামিদ দাবাশির একটি আর্টিকেল বঙ্গানুবাদ করেছিলাম।আন্তর্জাতিক রাজনীতির (ফিলিস্তিন ইস্যু) উপর অতীতের মিডিয়া ও বর্তমানের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে লেখা।রোর বাংলা কি আর্টিকেল অনুবাদ পাবলিশ করে?
হ্যাঁ, অনুবাদও প্রকাশ করে। আমার নিজেরও কিছু অনুবাদ আছে। কিন্তু বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। খেয়াল রাখতে হবে, অনুবাদের টপিক যেন জাস্ট নিউজ বা ওপিনিয়ন না হয়। যেরকম ফিচার আর্টিকেল রোর বাংলায় প্রকাশিত হয়, সেগুলোর অনুবাদ হতে পারে।
ভাই,আমি ইন্টারেস্টেড।কিন্তু ট্যাকাটুকা না দিলে তো পরিশ্রম করতে রাজি না।
ওদের ওয়েবে দেখলাম তখনই কেবল টাকা পাওয়া যাবে যখন তাদের প্যানেল কর্তৃক ইনভাইটেড হবো!
কেমনে কি!
এখন যেহেতু নিজেরা আহ্বান জানিয়েছে, তাই এখনকার কথা ভিন্ন। কিন্তু এমনিতে আপনি সারা বছরই কন্ট্রিবিউট সেকশনে গিয়ে লেখা জমা দিতে পারবেন। এখানে প্রধানত সেখানকার কথা বলা হয়েছে।
এর মানে হচ্ছে, বছরের যেকোনো সময় আপনি কন্ট্রিবিউট সেকশনে গিয়ে লেখা জমা দিলে সেটা হয়তো পাবলিশ হতে পারে। কিন্তু খুব বেশি অসাধারণ না হলে হয়তো আপনাকে রেগুলার রাইটার হিসেবে নাও নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে লেখা প্রকাশিত হলেও আপনি কোনো টাকা পাবেন না। ওটা জাস্ট আপনার “কন্ট্রিবিউশন”।
কিন্তু যদি পাবলিশ হওয়ার পর দেখা যায় বেশ ভালো সাড়া পড়েছে, প্রশংসিত হয়েছে, অথবা যদি আপনি এরকম আরো কয়েকটা লেখা দেওয়ার পর যদি দেখা যায় সম্পাদকদের কাছে আপনার লেখা খুবই পছন্দ হয়েছে, তখন আপনাকে প্যানেল থেকে নিয়মিত রাইটার হিসেবে লেখার আমন্ত্রণ জানানো হবে। তখন আপনাকে প্রতিটা আর্টিকেলের জন্য পে করা হবে।
কন্ট্রিবিউট সেকশনটা হচ্ছে ওপরে ওঠার সিঁড়ির মতো। প্রথমে ফ্রি লিখে নিজের রাস্তা তৈরি করে নেওয়া।
চমৎকার, আপনার লেখা পড়ে বরাবরের মতোই আনন্দ পেলাম…একটা সময় প্রচুর বই পড়তাম, এখনো পারি তবে আগের মতো না…এর কারণ হচ্ছে ফিকশন জাতীয় বইগুলো এখন আর মোহিত করে না…বরং আত্মজীবনীমূলক বই এখন বেশি ভালো লাগে…কি করে আবার আগের মতো বাছবিচার ছাড়াই বই পড়তে পারবো..?
অনেক ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য। বাছবিচার ছাড়া পড়া তো জরুরী না। বয়সের এবং অভিজ্ঞতার সাথে সাথে রুচিরও পরিবর্তন হবে। এটাই স্বাভাবিক। যেটা ভালো লাগে সেটাই পড়ুন। আমার নিজেরও এখন আর ফিকশন ভালো লাগে না। নন ফিকশনই বেশি পড়ি।
রোর বাংলার কন্ট্রিবিউটর সেকশন ই তো এখন খুঁজে পাই না। লেখা সাবমিট এর উপায় কী এখন বলতে পারেন?
আমি হেলথ নিয়ে লিখতে চাই। স্বাস্হ্য, সুরক্ষা, বিভিন্ন রোগ – ব্যাধি, চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। এই ওয়েবসাইটে এধরনের কন্টেন্ট এর চাহিদা কেমন? আর এরকম হেলথ কন্টেন্ট নিয়ে রোর বাংলায় লিখলে কেমন হয়?