মহানগর না, এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে ফেভারিট বাংলা অ্যান্থলজি ওয়েব সিরিজ “ঊনলৌকিক“।
“চরকি” অ্যাপে রিলিজ হওয়া সিরিজটা সুপারন্যাচারাল ঘরানার। পাঁচটা এপিসোড। প্রতিটার কাহিনী ভিন্ন ভিন্ন – যেটাকে অ্যান্থলজি বলে। এপিসোডগুলো মাত্র ২৩ মিনিট করে। প্রতিটাই সুন্দর, তবে তৃতীয় এবং পঞ্চম এপিসোড দুটো একটু বেশিই ভালো লেগেছে।
গল্পগুলো চমৎকার। রচনায় শিবব্রত বর্মন। প্রথম এপিসোড “মরিবার হলো তার স্বাদ”-এর কাহিনী নেওয়া হয়েছে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একই নামের তার একটি ছোট গল্প থেকে। এছাড়া “মিসেস প্রহেলিকা” এবং “দ্বিখণ্ডিত” এপিসোড দুটির কাহিনী নেওয়া হয়েছে তার “বানিয়ালুলু” নামের বই থেকে।
আরও পড়ুন: শিবব্রত বর্মনের বানিয়ালুলু: অসাধারণ এক সাইফাই-ফ্যান্টাসি গল্প সমগ্র
বাকি এপিসোডগুলো অন্য কোনো বইয়ে আছে কিনা, জানি না। কিন্তু সেগুলো দেখলেও ধারণা হয়, সরাসরি নাটক বা ওয়েব সিরিজের জন্য চিত্রনাট্য বানানো হয়নি, বরং আগে সাহিত্য হিসেবে ছোটগল্প লেখা হয়েছিল, পরে সেখান থেকে অ্যাডাপ্ট করে চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে।
সাহিত্য অবলম্বনে বাংলা নাটক-সিনেমা ভালো হয় না বলে দর্শদের মধ্যে একটা অসন্তোষ আছে। কিন্তু ঊনলৌকিকে পরিচালক রবিউল ইসলাম রবি সেরকম অভিযোগের কোনো সুযোগ রাখেননি। কাহিনী তো ভালোই, সিরিজটার মেকিংও চমৎকার। মুগ্ধ হয়ে দেখার মতো। মিসেস প্রহেলিকায় তিশার আর দ্বিখণ্ডিততে ইন্তেখাব দিনারের দুর্দান্ত অভিনয়ও মন কেড়েছে।
এরকম অতিপ্রাকৃতিক জঁনরার গল্প নিয়ে বাংলায় এর আগে কোনো কাজ হয়েছে কিনা জানি না। হলেও সেটা যে মানের দিক থেকে এরকম ছিল না, সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। সিরিজটা দেখে এতই মুগ্ধ হয়েছি যে, শিবব্রত বর্মনের বানিয়ালুলু বইটাও পড়ে ফেলেছি। এবং সেটা পড়েও মুগ্ধ হয়েছি। এই লেখকের এই জাতীয় অন্যান্য গল্প এবং এই পরিচালকের অন্যান্য কাজ যথাক্রমে রিডলিস্ট এবং ওয়াচলিস্টে রাখতে হবে।
পার্সোনাল রেটিং ৪/৫। হাইলি রেকমেন্ডেড।
মুভি-সিরিয়াল সম্পর্কিত আমার সবগুলো লেখা একত্রে পাবেন এই লিঙ্কে।