বিশ্ব রাজনীতি
-
ফিলিস্তিনের গল্প: দ্য স্টোরি অফ দ্য ল্যান্ড
মূল: সারাহ আলি, ভাষান্তর: মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা
আমি তার অশ্রুসিক্ত চোখের দিকে তাকালাম, এবং সেখানে সুখের মতো কিছু একটার দেখা পেয়ে আমি হাসলাম। যে মানুষটাকে আমি সব সময় বাবা হিসেবে জেনে এসেছি, আজ তিনি ফিরে এসেছেন।
আজ তাকে আর সেই অপরিচিত লোকটার মতো দেখাচ্ছে না, যাকে গত তিন বছর ধরে আমি পুরোপুরি চিনতে পারিনি। তাকে আর সেই ভুলোমনের স্থির মূর্তির মতো মনে হচ্ছে না, যিনি সব সময় দেয়ালের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন এবং বাড়ির কেউ যখন তাকে সম্বোধন করত, তখন অনাগ্রহের সাথে মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেন।
তিনি এখন এখানেই আছেন। তিনি এখানেই উপস্থিত আছেন। এবং আমি যখন আমার ভালো ফলাফল নিয়ে বড়াই করতে লাগলাম, তখন তিনি সত্যি সত্যিই সেটা শুনতে লাগলেন।
-
দেশত্যাগে মরিয়া আফগানরা: তালেবানভীতি, নাকি সুবিধাবাদিতা?
নো ডিয়ার মিডিয়া অ্যান্ড সেক্যুলার ভাই-বেরাদার, আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য এয়ারপোর্টে ভিড় জমানো মরিয়া মানুষেরা “আফগান জনগণ” না। ওরা আফগান জনগণের খুবই খুবই খুবই ক্ষুদ্র একটা অংশ। এর চেয়ে অনেক অনেক বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে তালেবানকে স্বাগত জানাচ্ছে।
মূল আফগান জনগণ তারাই, যারা তালেবানকে কতটুকু সমর্থন করে সেটা পরে বোঝা যাবে, কিন্তু তারা অ্যাটলিস্ট আমেরিকা এবং তার পাপেট কাবুল গভর্নমেন্টের চেয়ে তালেবানের টেকওভারকে প্রেফার করে। এবং পুরো দেশজুড়ে অন্য কোথাও তারা এরকম উদ্বিগ্ন হয়ে পালানোর চেষ্টা করেনি, মরিয়া হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেনি বলেই তালেবানের পক্ষে বিনাযুদ্ধে, শান্তিপূর্ণভাবে মাত্র এক সপ্তায় পুরো দেশ জয় করা সম্ভব হয়েছে।
-
আফগান যুদ্ধে আমেরিকা ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু ব্যবসায়ীরা লাভবান
আফগানিস্তানে যে তাসের ঘরের মতো একের পর এলাকার পতন ঘটছে, এরকম ঘটনা কিন্তু একেবারেই নতুন না। অনেকেরই মনে থাকার কথা, ২০১৩-১৪ সালে ইরাকেও হুবহু একই ঘটনা ঘটেছিল।
ইরাকেও মার্কিন বাহিনী চলে যাওয়ার পর আইসিস যখন আক্রমণ শুরু করে, তখন ম্যাজিকের মতো একের পর এক শহর তাদের হস্তগত হতে থাকে। লক্ষাধিক সৈন্যের মার্কিন-প্রশিক্ষিত ইরাকি সেনাবাহিনী কয়েকশো আইসিস জঙ্গির হাতে পরাজিত হয়ে শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমেরিকার দেওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, সাঁজোয়া যান সব আইসিসের হাতে পড়ে। ফলে তারা আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
-
তিউনিসিয়ার ক্যু কি উদারপন্থার পরাজয়?
শেষ পর্যন্ত তিউনিসিয়ার আরব বসন্তও ব্যর্থ হয়েছে।
অ্যাজ এক্সপেক্টেড, এই নিউজে কেউ কেউ খুবই খুশি। যেমন লিবিয়াতে হাফতারপন্থীরা, মিসরে সিসিপন্থীরা, সৌদি-ইমারাতে মাদখালিরা। এবং পুরো আরবে মোটামুটি সেক্যুলাররা।
কিন্তু ইন্টারেস্টিংলি, বাংলার ফেসবুকে সেক্যুলারদের এটা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা দেখা যাচ্ছে না। বরং এখানে খুশি ইসলামপন্থীরাই। তাদের লজিক – আগেই বলেছিলুম, এত উদারতা দেখাইও না। এখন বুঝলা তো? হুঁহ!
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মুরসির মতো কিছুটা কট্টরপন্থা বা গান্নুশির মতো উদারপন্থাই তাদের সরকার পতনের একমাত্র কারণ না। এবং শুধু ইসলামপন্থীদেরই পতন হয় না। সরকার পতনের পেছনে অনেক অনেক অনেক কারণ থাকে।
-
ওরা আমাদের বিপ্লব কেড়ে নিয়েছে
ওরা আমাদেরকে ঘড়ি দিয়ে সময় কেড়ে নিয়েছে
ওরা আমাদেরকে জুতা দিয়ে পথ কেড়ে নিয়েছেওরা আমাদেরকে পার্লামেন্ট দিয়ে স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে
ওরা আমাদেরকে দোলনা দিয়ে উতসব কেড়ে নিয়েছেওরা আমাদেরকে গুঁড়া দুধ দিয়ে শৈশব কেড়ে নিয়েছে
ওরা আমাদেরকে সার দিয়ে বসন্ত কেড়ে নিয়েছেওরা আমাদেরকে প্রহরী আর তালা দিয়ে নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে
ওরা আমাদেরকে বিদ্রোহী দিয়ে আমাদের বিপ্লব কেড়ে নিয়েছে।—- সিরিয়ান কবি মুহাম্মাদ আল-মাগুত
-
২৫ জানুয়ারি আন্দোলনের পটভূমি
আরব বসন্ত অফিশিয়ালি শুরু হয়েছিল তিউনিসিয়া থেকে। কিন্তু বাস্তবে তিউনিসিয়ার আন্দোলনটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই চাপা পড়ে যেতে পারত, যদি না সেই আন্দোলন মিশরে গড়াত, যদি না ২৫ জানুয়ারি তাহরির স্কয়ারে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হয়ে মোবারককেও বেন আলির মতো পদত্যাগে বাধ্য করত।
তিউনিসিয়ার আন্দলনটা এতই বিচ্ছিন্ন একটা ঘটনা ছিল, পশ্চিমা বিশ্বও সেটার গুরুত্ব বুঝতে পারেনি। যেই ফ্রান্স মাত্র দুই মাস পরেই গাদ্দাফির পতন ঘটিয়ে ছেড়েছিল, সেই ফ্রান্সই তিউনিসিয়াতে উল্টা আন্দোলন দমন করার জন্য বেন আলির পক্ষে সেনাবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্বের প্রায় কোনো দেশই তিউনিসিয়ার আন্দোলনকারীদের পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করেনি। তিউনিসিয়ার জনগণ নিজেরাই আন্দোলনকে সফল করে তুলেছিল।
-
দ্য অ্যাভেঞ্জার: লকারবি বম্বমেকারের সন্ধানে
লকারবি ইনভেস্টিগেশন নিয়ে নিউইয়র্কারের একটা ফ্যাসিনেটিং লংফর্ম আর্টিকেল পড়লাম – The Avenger। এফবিআই যা পারেনি, নিহত এক ব্যক্তির ভাই নিজস্ব অবসেশন থেকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কীভাবে তা সম্ভব করে দেখিয়েছে, অর্থাৎ লকারবির বম্ব মেকারকে খুঁজে বের করেছে, সেই কাহিনী। মাইন্ডব্লোয়িং একটা পিস।
লকারবি বম্বিংয়ের ঘটনাটা ১৯৮৮ সালের। সে বছর স্কটল্যান্ডের লকারবি শহরের আকাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যান অ্যাম ফ্লাইট ১০৩-এর লাগেজ কম্পার্টমেন্টে রাখা একটি টাইম বোমা বিস্ফোরিত হয়। ফলে ২৫৯ আরোহীর সবাই নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই ছিল মার্কিন নাগরিক। এই ঘটনাটাই লকারবি বম্বিং নামে পরিচিত। এবং এটা ছিল তখন পর্যন্ত মার্কিন বেসামরিক নাগরিকদেরকে লক্ষ্য করে সংঘটিত সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে একটা।
-
ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বাতিল ভবিষ্যতের জন্য অশনি সঙ্কেত
টুইটার, ফেসবুকের মতো টেক কোম্পানিগুলো যে সম্পূর্ণ নিজেদের সিদ্ধান্তে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্ট ব্লক বা রিমুভ করে দিতে পারছে, এটাকে এখনকার প্রেক্ষিতে খুব পজিটিভ ব্যাপার মনে হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এটা খুবই ডেঞ্জারাস ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করছে।
ইউভ্যাল নোয়াহ হারারি তার 21 lessons for the 21st century বইয়ে ভবিষ্যতের পৃথিবীর কিছু চিত্র এঁকেছেন। এবং তার মতে আগামী দিনগুলোতে মূল ক্ষমতা ট্রাম্প-বাইডেনদের মতো প্রেসিডেন্টদের হাতে থাকবে না। থাকবে টেক কোম্পানিগুলোর হাতে। এবং সেই ক্ষমতা হবে আনলিমিটেড।
-
সৌদি আরব কি সালমান আল-আউদাহকে মুক্তি দেবে?
কাতারের সাথে সৌদি আরবের পুনরায় সুসম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে অনেকেই প্রশ্ন করছে – এখন কি তবে সালমান আল-আউদাহ মুক্তি পাবেন?
সালমান আল-আউদাহ (বিকল্প বানান সালমান আল-আওদাহ) হচ্ছেন সৌদি আরবের সবচেয়ে বিখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে একজন। কাতার অবরোধের পর তার করা একটা টুইটের অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কিন্তু সরাসরি কাতারের পক্ষেও টুইট করেননি, তিনি শুধু দোয়া করেছিলেন যেন দুই দেশের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় থাকে।
সেই অপরাধেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং যেহেতু সৌদি আরব কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ তোলে, তাই তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়, তাকে দীর্ঘদিন সলিটারি কনফাইনমেন্টে রাখা হয়, এবং এখনও তিনি বন্দীই আছেন।
-
অপারেশন অলিম্পিয়া: যেদিন সম্পূর্ণ পিএলও নেতৃত্বকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল ইসরায়েল!
আজকের দিনটায় (১ জানুয়ারি) ঘটতে যাচ্ছিল অপারেশন অলিম্পিয়া – বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম বর্বোরিত একটা সন্ত্রাসী হামলা। আর সেটা ঘটাতে যাচ্ছিল ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের পিএলও নেতাদের উপর।
১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি পিএলওর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লেবাননের বৈরুত স্টেডিয়ামে একটা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পিএলওর চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত, তার ঘনিষ্ঠ সহকারী আবু আইয়্যাদ, আবু জিহাদসহ পিএলওর প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ নেতা।